সংসদ ভবন— ফাইল চিত্র।
লোকসভার পরে এ বার রাজ্যসভা। বিরোধীদের তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেই রবিবার সংসদের উচ্চকক্ষে ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার সংক্রান্ত দু’টি বিতর্কিত বিল (বিল পাশ সংক্রান্ত বিস্তারিত খবর এখনই আসছে)।
সকাল থেকে যা ঘটেছে:
কেন্দ্রীয় কৃষি উন্নয়ন, কৃষক কল্যাণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর এদিন বিল পেশ করে বলেন, ‘‘কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার পথে এই বিল কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না।’’ যদিও কংগ্রেস বলেছে, এই বিল আসলে ‘কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা’।
পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান-সহ বিভিন্ন রাজ্যে এদিন সকাল থেকেই কৃষি বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে পথে নেমেছেন চাষিরা। উত্তর ভারতের প্রভাবশালী কৃষক সংগঠন ‘ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন’ এদিন দুপুর ১২টা থেকে পথ অবরোধ আন্দোলন ঘোষণা করেছে।
‘অত্যাবশ্যক পণ্য আইন’ সংশোধন, ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল তিনটি ইতিমধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। এদিন ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল পেশ হয়েছে রাজ্যসভায়। আন্দোলনকারী চাষি এবং বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই বিলগুলিতে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে বড় ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে একতরফা ভাবে ফসলের দাম নির্ধারণ এবং মজুতদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
শুধু বিরোধী নয়, বৃহস্পতিবার লোকসভায় কৃষি সংস্কার বিলের প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বিজেপির সবচেয়ে পুরনো সহযোগী শিরোমণি অকালি দলও। কৃষি বিল পাশের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন অকালি দলের প্রধান প্রকাশ সিংহ বাদলের পুত্রবধূ হরসিমরত কউর বাদল। হরিয়ানায় বিজেপির সহযোগী জেজেপি’ও বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘কৃষি বিল নিয়ে মিথ্যা প্রচার চলছে’, মোদীর নিশানায় বিরোধীরা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষি বিল প্রসঙ্গে বিরোধীদের নিশানা করে বলেন, “মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে যে, সরকারি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) মিলবে না।’’ এর পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম শনিবার প্রশ্ন তোলেন— চাষিরা সরকারি মন্ডির বাইরে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে ফসল বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা তার চেয়ে বেশি দরে ফসল কিনতে বাধ্য থাকবেন, এমন কোনও শর্তের কথা বিলে নেই কেন? সেই প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়েই আজ রাজ্যসভায় শক্তিপরীক্ষায় নেমেছে সরকার পক্ষ।
আরও পড়ুন: কৃষি বিল নিয়ে মিথ্যে বলছেন মোদী: চিদম্বরম
সংসদীয় পাটিগণিতের হিসেবে রাজ্যসভায় সরকারপক্ষের জয় নিশ্চিত। ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় অন্তত ১৩০টি ভোট পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বিজেপি। এনডিএ জোটের শরিকরা ছাড়াও বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো দলগুলিও বিলের পক্ষে ভোট দেবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।