নিহত কৃষক শুভকরণ সিংহ। — ফাইল চিত্র।
আন্দোলনে নেমে প্রাণ হারিয়েছেন ২১ বছরের কৃষক শুভকরণ সিংহ। পঞ্জাবের সরকার এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল। সেই ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করল নিহত কৃষকের পরিবার। জানাল, সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার চাইছেন তাঁরা, যা টাকার সমতুল্য হতে পারে না। কৃষকনেতাদের দাবি, দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কৃষকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে না। আন্দোলনে নেমে ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হল কৃষকের, সেই নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে না। এই বিষয়ে পঞ্জাব সরকারের দিকেও আঙুল তুলেছেন কৃষকনেতারা। দাবি করেছেন, দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে সক্রিয় হতে হবে।
শুক্রবার নিহত কৃষকের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ এবং তাঁর বোনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। সমাজমাধ্যমে সে কথা জানিয়েছেন তিনি। এর পরেই পরিবারের তরফে শুক্রবার বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার চাইছি। এটা টাকা বা চাকরির সমতুল্য হতে পারে না।’’ অন্য দিকে, কৃষক নেতা সরবন সিংহ পান্ধের এবং দাল্লেওয়াল দাবি তুলেছেন, শুভকরণের মৃত্যুর জন্য দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। পান্ধের এ-ও জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণ নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন। দুনিয়ার কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
এর পর কৃষকনেতারা পঞ্জাব সরকারের দিকেও আঙুল তুলেছেন। পান্ধেরের কথায়, ‘‘শুধু ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং নিহতের পরিবারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে চলবে না। ‘শহিদ’-এর ন্যায়বিচার করাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তাদের, যা অনেকটাই নির্ভর করছে, যত তাড়াতাড়ি পঞ্জাব সরকার এফআইআর দায়ের করবে, তার উপর।’’ এখানেই থামেননি তিনি। আরও জানিয়েছেন, ‘‘নিহতের পরিবারের সঙ্গে ক্ষতিপূরণের আলোচনা করে সময় নষ্ট করার বদলে দোষীদের নামে এফআইআর করা উচিত।’’ দাল্লেওয়াল জানিয়েছেন, পঞ্জাবের পাঁচ কৃষককে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে হরিয়ানার পুলিশ। তাঁদের ছাড়িয়ে আনার জন্য হরিয়ানা সরকারের সঙ্গে কথা বলা উচিত মান সরকারের।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকেরা ‘দিল্লি চলো’-র ডাক দিয়েছেন। সেই থেকে তাঁরা পথে। দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছেন পুলিশের সঙ্গে। বুধবার খনৌরি সীমান্তে পুলিশের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষে তিন জন গুরুতর জখম হয়েছিলেন। হাসপাতালে এক জনের মৃত্যু হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মাথায় আঘাতের কারণে ২১ বছরের ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে এখনও। ময়নাতদন্তের পরেই তা স্পষ্ট হবে। যদিও কৃষকনেতাদের দাবি, দোষীদের শাস্তি হলে তবেই যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে।