Fact Check

২১ দিনের লকডাউন এর পর আরও ২৮ দিন! হু-র এই বিজ্ঞপ্তি কি সঠিক?

ভাইরাল হওয়া এই নিয়মবিধি পুরোপুরি ভুয়ো।

Advertisement

ঋত্বিক দাস

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ১৭:১৪
Share:

হু-র নামে এই বিজ্ঞপ্তি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়েছে ফেসবুক, হোয়াটস্অ্যাপে।

কী ছড়িয়েছে?

Advertisement

এক পাতার একটা নিয়মবিধি বা প্রোটোকল, যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নাম লেখা। বলা হচ্ছে, ‘সব চেয়ে বিপজ্জনক ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে লকডাউনের নিয়ম ও পদ্ধতি’। এর পর ধাপে ধাপে কী ভাবে লকডাউন করা হবে তার বিবরণ।

প্রথম ধাপ – ১ দিন

Advertisement

দ্বিতীয় ধাপ – ২১ দিন

৫ দিন পর

তৃতীয় ধাপ – ২৮ দিন

৫ দিন পর

চতুর্থ ধাপ – ১৫ দিন

বলা হয়েছে আমাদের ভারত সরকার এই একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে এই ভাবে:

২২ মার্চ – ১ দিন (পরীক্ষামূলক লকডাউন)

২৪ মার্চ – ১৪ এপ্রিল – ২১ দিন (প্রথম লকডাউন)

১৫ এপ্রিল – ১৯ এপ্রিল – লকডাউন শিথিল

২০ এপ্রিল – ১৮ মে – ২৮ দিন (দ্বিতীয় লকডাউন)

যদি কোভিড-১৯ রোগীর অনুপাত শূন্য হয়

লকডাউন প্রত্যাহার,

না হলে

১৯ মে – ২৪ মে লকডাউন শিথিল

২৫ মে – ১০ জুন – ১৫ দিন (চূড়ান্ত লকডাউন)

কোথায় ছড়িয়েছে?

ফেসবুক এবং হোয়াটস্অ্যাপে বিপুল শেয়ার হয়েছে এই নিয়মবিধি। লেখা মোটামুটি এক, শুধু নির্দেশিকার নকশায় একটু অদল বদল।

এই তথ্য কি সঠিক?

ভাইরাল হওয়া এই নিয়মবিধি পুরোপুরি ভুয়ো।

সত্যি কী এবং আনন্দবাজার কী ভাবে তা যাচাই করল?

হু-র লকডাউন সংক্রান্ত কোনও প্রোটোকল নেই। তাদের নামে যে বিজ্ঞপ্তি ছড়ানো হয়েছে সেই খবর পৌঁছয় হু-র কাছেও। এর পর গতকাল সন্ধে ৭টা ৪৮ মিনিটে হু তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে জানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই প্রোটোকল ভিত্তিহীন এবং ভুয়ো।

গত ২২ মার্চ রবিবার, প্রধানমন্ত্রীর আবেদন মতো জনতা কার্ফু পালন করা হয় গোটা দেশে। এর পর ২৪ মার্চ, মঙ্গলবার রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন। যা হুবহু মিলে যাচ্ছে ভাইরাল হওয়া ওই বিজ্ঞপ্তির লকডাউন নিয়মবিধির সঙ্গে। ফলে মনে হতে বাধ্য যে ওই নিয়ম মেনেই হয়তো লকডাউন কার্যকর করতে চলেছে কেন্দ্র। কিন্তুএই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারে লকডাউন নিয়ে তাদের আগামী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেনি।

এর পর আমরা একটু খোঁজাখুঁজি শুরু করি যে অন্য দেশে কী ভাবে লকডাউন করা হচ্ছে।

যেমন তাইল্যান্ডে গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে কার্ফু,চলবে আগামী ৩০ এপ্রিল অবধি, রাত ১০টা থেকে ভোর ৪তে পর্যন্ত। কার্ফু ভাঙলে দু’বছরের জেল কিংবা ১২০০ ডলার জরিমানা হতে পারে।

পানামাতে শুধুমাত্র রবিবারই সম্পূর্ণ লকডাউন হচ্ছে। অন্যান্য দিন মহিলা এবং পুরুষরা আলাদা আলাদা দিনে দু’ঘণ্টার জন্য রাস্তায় বেরতে পারবেন। দক্ষিণ আফ্রিকায়, ভারতের মতোই, গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন।

নিউজিল্যান্ড আবার ২৫ মার্চ থেকে এক মাসের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে। ১৭ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয় বেলজিয়ামে, পরে লকডাউন এর সময়সীমা বাড়ানো হয় ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত।

ফলে দেখাই যাচ্ছে যে প্রত্যেকটি দেশ নিজ নিজ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে লকডাউন করছে। হু-র লকডাউন সংক্রান্ত কোনও প্রোটোকল মেনে নয়,কারণ এই ধরনের কোনও প্রোটোকল হু-র নেই।

হোয়াটস্অ্যাপ, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় তো তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement