লকডাউন অমান্য করায় একদল মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে পুলিশ। ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিয়ো।
কী ছড়িয়েছে?
একটি ভিডিয়ো, যেখানে দেখা যাচ্ছে একদল মানুষ উবু হয়ে বসে, কান ধরে হাঁটছেন আর পুলিশ মাঝে মধ্যে তাদের লাঠি পেটা করছে। ভিডিয়োটির বিবরণে হিন্দিতে যা লেখা, তার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘‘দেখুন লালকেল্লা, তাজমহল এবং কুতুব মিনারের মালিকদের করোনা কী করেছে।’’
কোথায় ছড়িয়েছে?
ফেসবুক এবং টুইটারে একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার হয়েছে এই ভিডিয়ো।
ফেসবুক ও টুইটারে একাধিক বার শেয়ার হয়েছে এই ভিডিয়ো।
এই তথ্য কি সঠিক?
ভিডিয়োটি ভুয়ো নয়, কিন্তু এটি ভারতের ঘটনা নয়।
সত্যি কী এবং আনন্দবাজার কী ভাবে তা যাচাই করল?
এই ভিডিয়োটি উত্তর পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মানসেহরা থানার। ভিডিয়োটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে গত ২৮ মার্চ। পাকিস্তানের ওই থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, লকডাউন অমান্য করার অপরাধে পুলিশকর্মীরা এ ভাবে কিছু মানুষকে শাস্তি দেন। আমরা ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটির স্ক্রিনশট নিয়ে গুগ্ল-রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সেখানেই খুঁজে পাই রেডিটের একটি লিঙ্ক। যেখানে শিরোনামে লেখা, ‘Consequences of Breaking the Lock down: pakistan’। ভিডিয়োটি আপলোড করা হয় গত ২৯ মার্চ। একই ভাবে আমরা উর্দুতে লেখা ২৮ মার্চ করা একটি টুইটের লিঙ্ক পাই, যেখানে লেখা আছে, ‘মানসেহরার মানুষের বর্তমান অবস্থা’।
এই টুইটের সূত্র ধরেই আমরা গুগ্লে ‘mansehra lockdown police’ লিখে সার্চ করি। আমাদের হাতে আসে পাকিস্তানের খবরের চ্যানেল জিও টিভি-র একটি প্রতিবেদন। সেখানে থেকেই জানা যায় আসল বিষয়টা।
পাকিস্তানের জিও টিভির সেই প্রতিবেদন।
করোনা পরিস্থিতির জেরে জারি ছিল ১৪৪ ধারা। এই অবস্থায় মানসেহরাতে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করায় ওই ৬০ জনকে হেফাজতে নিয়ে এমন শাস্তি দেয় পুলিশ। শাস্তি দেওয়ার ধরন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
এর পর মানসেহরা পুলিশের তরফে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে বলেও জানানো হয়। আসলে পাকিস্তানের একটি ভিডিয়োকে ভারতে ঘটে যাওয়া ঘটনা বলে চালানো হয়েছে এখানে।
হোয়াটস্অ্যাপ, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় তো তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in