Covid-19

বিল গেটসের দেওয়া ভ্যাকসিনে অনেক কিশোরীর মৃত্যু, আদালতে যাচ্ছে ভারত! সত্যি না মিথ্যে?

'বিল গেটসের দেওয়া ভ্যাকসিনে অনেক কিশোরীর মৃত্যু, আদালতে যাচ্ছে ভারত', দাবি করা হচ্ছে ভাইরাল হওয়া একটি ফেসবুক পোস্টে

Advertisement

ঋত্বিক দাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৫৬
Share:

এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরেই যত বিতর্ক।

কী ছড়িয়েছে?

Advertisement

একটি পোস্ট, যেখানে একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিল গেটস এবং চিকিৎসক অ্যান্টনি ফুসিকে। বলা হচ্ছে, ‘‘এই ছবি তাঁদের ভারত সফরের পর পরই তোলা। সোরসের (মার্কিন ব্যবসায়ী জর্জ সোরস) সঙ্গে অংশীদারিত্বে উহানে একটি গবেষণাগার রয়েছে বিল গেটসের। বিল গেটস করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে বিনিয়োগ করেছেন। ভারত বিল গেটসের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে। কারণ, তাঁর উদ্যোগে তৃতীয় বিশ্বের ৯ থেকে ১৫ বছর বসয়ী ৭৭ হাজার কিশোরীদের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছিল যাদের মধ্যে অনেকে মারা গিয়েছে।’’

কোথায় ছড়িয়েছে?

Advertisement

ফেসবুকে ও টুইটারে অনেকে শেয়ার করেছেন এই পোস্ট।

এই তথ্য কি সঠিক?

না, দুটো দাবির কোনওটিই ঠিক নয়। চিনে বিল গেটসের এমন কোনও গবেষণাগার নেই। তিনি বা তাঁর কোনও সংস্থা এমন কোনও প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করেননি, যার জেরে তৃতীয় বিশ্বের কিশোরীদের মৃত্যু হয়েছে।

সত্যি কী এবং আনন্দবাজার কী ভাবে তা যাচাই করল?

প্রথমেই আসা যাক ভাইরাল হওয়া ছবিটির বিষয়ে। গুগ্‌লে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গিয়েছে, ছবিটি সাম্প্রতিক কালের নয়, বরং দু’বছরের পুরনো। ২০১৮ সালে আমেরিকার মেরিল্যান্ডের বেথেসডায় বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ে একটি কর্মশালার পর এই ছবি তোলা হয়।

ছবিটি সাম্প্রতিক কালের নয়। বছর দুয়েকের পুরনো।

ছবিটি সাম্প্রতিক কালের নয়। ২০১৮ সালে আমেরিকায় একটি কর্মশালার পর এটি তোলা। উহানে বিল গেটসের একটি গবেষণাগার আছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা-ও মিথ্যা। তৃতীয় যে দাবি করে বলা হচ্ছে, প্রতিষেধকে কিশোরীদের মৃত্যু হয়েছে, তা-ও ঠিক নয়। গুগ‌্ল সার্চে দেখা গিয়েছে, যে কিশোরীদের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে, সেই ঘটনাটি ২০০৯ সালের।

বিল গেটস বা তাঁর কোনও সংস্থা এমন প্রতিষেধক বানায়নি, গুগ‌্ল সার্চ থেকে জানা যায় আসল ঘটনা।

বিল গেটস বা তাঁর কোনও সংস্থা এমন প্রতিষেধক বানায়নি, গুগ‌্ল সার্চ থেকে জানা যায় আসল ঘটনা। প্রপার্টি ফর অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি ইন হেলথ নামে একটি মার্কিন সংস্থা সে বছর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং গুজরাতে ২৪ হাজার ৭৭৭ কিশোরীর উপর হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে। মার্কিন সংস্থাটির নানা গবেষণার পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। কিন্তু তারা ওই ভ্যাকসিন তৈরি করেনি। প্রতিষেধক নেওয়া সাত কিশোরীর মৃত্যু হওয়ায় সে সময় বিতর্ক হয়। কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ জানান, ওই মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিষেধক প্রয়োগের কোনও যোগ ছিল না।

হোয়াটস‌্অ্যাপ, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় তো তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement