প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উত্তরপ্রদেশের বহরাইচের বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উড়েছে মানুষখেকো নেকড়ের আনাগোনায়। গ্রামের মধ্যে কোথায় লুকিয়ে আছে তারা, কখন, কার উপর হামলা চালাবে, সেই নিয়ে আলোচনা চলছে। লাঠিসোটা হাতে রাতপাহারায় গ্রামের পুরুষেরা। সেই আবহেই এ বার বহরাইচ গ্রামে ছড়াল ‘অন্য জন্তু’র আতঙ্ক!
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে বহরাইচে মানুষখেকো নেকড়ের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ছ’টি নেকড়ে হামলা চালাচ্ছিল। তার মধ্যে চারটি ধরা পড়লেও দু’টি এখনও অধরা। মঙ্গলবার দেহরাদূনের ‘ওয়াইল্ডলাইফ ইস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’-এর (ডব্লিউআইআই) বিশেষজ্ঞেরা বহরাইচের দুর্ঘটনাস্থলে যান। জন্তুর পায়ের ছাপ, আহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পর্যবেক্ষণ করে এক নতুন সম্ভাবনার কথা জানান তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বহরাইচে আতঙ্ক ছড়ানো প্রাণীটি কুকুর এবং নেকড়ের মধ্যে একটি ‘ক্রসব্রিড’ হতে পারে। এক বিশেষজ্ঞ বিলাল আহমেদের কথায়, ‘‘আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে যদি অনুমান নিশ্চিত হয়, তবে এই নতুন জাতের জন্তু আরও বিপজ্জনক।’’ তাঁরা আরও মনে করেন, ভারতে নেকড়ের সংখ্যা হ্রাসের নেপথ্যে এই ধরনের ‘ক্রসব্রিড’ জন্তুই দায়ী।
বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন, ১৯৭২-এ উল্লেখ করা হয়েছে নেকড়ে একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। ভারতে নেকড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। সেখানে নতুন প্রজাতির এই ক্রসব্রিড নেকড়ের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসের ১৭ তারিখ থেকে মানুষখেকো নেকড়ের হামলায় এখনও পর্যন্ত আটটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুধু তা-ই নয়, হামলায় জখম হয়েছেন অনেকেই। মানুষখেকো নেকড়েদের ধরতে বহরাইচ জেলা প্রশাসন ‘অপারেশন ভেড়িয়া’ প্রকল্পের অধীনে কাজ শুরু করেছে। সেই মানুষখেকো নেকড়েদের ‘দেখামাত্রই গুলি’র নির্দেশও দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।