প্রতীকী ছবি।
দেশের মাটিতেই বিশ্ব মানের অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) তৈরিতে উৎসাহ দিতে সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, প্রাথমিক ভাবে সরকার গবেষণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধাপে পুঁজি জোগালে, উৎসাহিত হবে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। রকমারি অ্যাপ তৈরির জন্য এগিয়ে আসবে দেশীয় স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলিও। কিন্তু তেমনই দীর্ঘ মেয়াদে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশ তথা দুনিয়ার জমি দখল করতে হলে সরকারের মুখাপেক্ষী না-থেকে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে তাদের। টক্কর দিতে হবে এমনকি অ্যাপল, গুগলের মতো মার্কিন বহুজাতিকের সঙ্গেও। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সদ্য ঘোষিত ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া আত্মনির্ভর ভারত অ্যাপ উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জ’ সম্পর্কে আয়োজিত এক আলোচনায় এমনই কথা শোনা গেল বিশেষজ্ঞদের মুখে।
আইআইটি খড়্গপুরের অর্থনীতির অধ্যাপক পুলক মিশ্রের কথায়, সম্প্রতি কিছু চিনা অ্যাপ বাতিল হওয়ায় বাজারে চাহিদা থাকবে নতুন সমগোত্রীয় অ্যাপের। ভারতীয় সংস্থাগুলি তা পূরণের জন্য অবশ্যই ঝাঁপাতে পারে। সরকার তাতে পাশে দাঁড়ালে অবশ্যই উৎসাহ পাবে তারা। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেই বাজার দখলে রেখে বাইরের বাজারের দিকেও তাকাতে হলে, আর শুধু সরকারের ভরসায় থাকলে চলবে না। লগ্নি থেকে বিপণন, সমস্ত বিষয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মন দিতে হবে বাজারের চাহিদা মেপে নিত্যনতুন অ্যাপ তৈরির উপরে।
ভারতের দিকে আগ্রাসী নজরে তাকানো কোনও দেশের অ্যাপ, যন্ত্র, যন্ত্রাংশের উপরে নির্ভরতা একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা যে পাখির চোখ, এ দিন তা স্পষ্ট জানিয়েছেন টেলিকম দফতরের প্রযুক্তি বিভাগের সদস্য কে রামচন্দ। বাতিল হওয়া অ্যাপের ফেলে যাওয়া বাজার আর এই পড়ে পাওয়া সুযোগকে পুঁজি করে বাড়ি থেকে কাজ (ওয়ার্ক ফ্রম হোম), ই-লার্নিং, খবর, গেমিং সমেত বিভিন্ন ক্ষেত্রে রকমারি অ্যাপ তৈরির সুযোগ দেশীয় সংস্থাগুলি নিতে পারে বলে মনে ওই দফতরেরই ডিডিজি কিশোর বাবু। আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক রাজা দত্ত, আইআইএম-ইনদওরের অধ্যাপক অজিত ফডনিস থেকে টাটা টেলি সার্ভিসেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৌরভ চক্রবর্তী-সকলেই মনে করেন, এমনিতেই ডাউনলোডের সংখ্যা বিচারে ভারতে অ্যাপ ব্যবহার বাড়ছে সব থেকে দ্রুত। তার উপরে এখন এমনকি গ্রামীণ এলাকাতেও স্মার্টফোনের চল যে ভাবে বাড়ছে, তাতে ভারতীয় সংস্থাগুলির পক্ষে এই লোভনীয় বাজার হাতছাড়া করা কাজের কথা নয়।