Assembly Election 2024

হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীরের বুথফেরত সমীক্ষায় চাপে মোদী, দুই বিধানসভাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘ইন্ডিয়া’?

অবশ্য ভারতে ভোটের ইতিহাস বলছে, আসল ফলের সঙ্গে বুথফেরত সমীক্ষা অনেক সময়েই মেলে না। তবে ফলাফল মিলে যাওয়ার কিছু উদাহরণও রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৩
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

জয়নগরকাণ্ড ঘিরে তৈরি হওয়া নতুন অশান্তির আবহে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জম্মু ও কাশ্মীর এবং হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনের অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস দেখে। লোকসভা ভোটের পর প্রথম বড় নির্বাচনে দুই বিধানসভাতেই বিজেপির হারের পূর্বাভাস রয়েছে তাতে। তার মধ্যে এক দশক পরে হরিয়ানায় কংগ্রেসের ক্ষমতাচ্যুত হতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দল।

Advertisement

অন্য দিকে, ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেস জোট জম্মু ও কাশ্মীরে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে পারে বলে অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস। তবে হরিয়ানায় কংগ্রেসে সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পেলেও ত্রিশঙ্কু হতে পারে জম্মু ও কাশ্মীর। অবশ্য ভারতে ভোটের ইতিহাস বলছে, আসল ফলের সঙ্গে বুথফেরত সমীক্ষা অনেক সময়েই মেলে না। তবে ফলাফল মিলে যাওয়ার উদাহরণও কম নয়। আসল ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) গণনার দিন পর্যন্ত। ঘটনাচক্রে, দুই বিধানসভাতেই আসনসংখ্যা ৯০। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ৪৬।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটারের বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী হরিয়ানায় কংগ্রেসের ৫০-৫৮, বিজেপির ২০-২৮, জেজেপির ০-২ এবং অন্যদের ঝুলিতে ১০-১৪ আসন যেতে পারে। অন্যদের মধ্যে রয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালার ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদল (আইএনএলডি)। ওই সমীক্ষা বলছে, কংগ্রেস ৪৬ শতাংশ, বিজেপি সাড়ে ৩৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে। অর্থাৎ, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের ভোটের ফারাক হতে পারে প্রায় ১০ শতাংশের।

Advertisement

এবিপি নিউজ়ে প্রকাশিত ‘পিপল্‌স পাল্স’ বুথফেরত সমীক্ষার ফল বলছে হরিয়ানা বিধানসভার ৯০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৪৯-৬১ , বিজেপি ২০-৩২ , প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালার আইএনএলডি ২-৩, অন্যেরা ৪-৫ আসনে জিততে পারে। ‘অন্যদের’ মধ্যে রয়েছে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালার জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি)। নিউজ়১৮-এ প্রকাশিত বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী হরিয়ানায় কংগ্রেস ৫৪, বিজেপি ২৬, আইএনএলডি ১, জেজেপি ১ এবং অন্যেরা ৮টি আসনে জিততে পারে।

রিপাবলিক-ম্যাট্রিজ বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল বলছে, হরিয়ানায় কংগ্রেস ৫৫-৬২, বিজেপি ১৮-২৪, আইএনএলডি ৩-৬, জেজেপি ০-৩ এবং অন্যেরা ২-৫ আসনে জিততে পারে। কংগ্রেস প্রায় ৩৬ শতাংশ, বিজেপি ৩০ শতাংশ, আইএনএলডি ১২ শতাংশ, জেজেপি সাড়ে ৬ শতাংশ এবং অন্যেরা ১৫ শতাংশ ভোট পেতে পারে। ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে হরিয়ানায় বিজেপি ৪০, কংগ্রেস ৩১, জেজেপি ১০, আইএনএলডি ১ অন্যেরা ৮টি আসনে জিতেছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বার সবক’টি সমীক্ষাতেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে জেজেপিকে পিছনে ফেলে তৃতীয় হবে আইএনএলডি।

ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটারের বুথফেরত সমীক্ষা বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরের ৯০টি আসনের মধ্যে এনসি-কংগ্রেস জোট ৪০-৪৮, বিজেপি ২৭-৩২, পিডিপি ৬-১২ এবং অন্যেরা ৬-১১টি আসনে জিততে পারে। অঙ্কের হিসাবে এনসি-কংগ্রেস জোট ৩৯ শতাংশ, বিজেপি ২৩ শতাংশ, পিডিপি ১০ শতাংশ এবং অন্যেরা ২৮ শতাংশ ভোট পেতে পারে।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৭টি কাশ্মীর উপত্যকা এবং ৪৩টি জম্মুতে রয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটারের পূর্বাভাস, জম্মুর ৪৩টি আসনের মধ্যে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-কংগ্রেস জোট ১১-১৫, বিজেপি ২৭-৩১, পিডিপি ০-২ এবং অন্যন্য প্রার্থীরা ০-১টি আসনে জিততে পারেন। কাশ্মীর উপত্যকার ৪৭টি আসনের মধ্যে এনসি-কংগ্রেস জোট ২৯-৩৩, পিডিপি ৬-১০, বিজেপি ০-১ এবং অন্যেরা ৬-১০টি আসন পেতে পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে ‘অন্যদের’ মধ্যে বারামুলার সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার রশিদের ‘আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টি’ এবং জামাতে ইসলামির নতুন জোট ভাল ফল করতে পারে। আসন জিততে পারে সাজ্জাদ লোনের পিপল্‌স কনফারেন্সও। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে যার সুফল পেতে পারে বিজেপি। রিপাবলিক-গুলিস্তান নিউজ বুথ ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস, জম্মু ও কাশ্মীর ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে। এনসি-কংগ্রেস ৩১-৩৬ (এনসি ২৮-৩০, কংগ্রেস ৩-৬), বিজেপি ২৮-৩০, পিডিপি ৫-৭, আম আদমি পার্টি ১, আপনি পার্টি ১-২, সিপিএম ১, পিপলস কনফারেন্স ০-২, এআইপি ১-২ এবং নির্দল ও অন্যেরা ৫-৯টি তে জিততে পারে। অর্থাৎ প্রধান চার প্রতিদ্বন্দ্বী বাদে অন্যেরা ১০-১৬টিতে জিততে পারে।

নিউজ১৮-র পূর্বাভাস, জম্মু ও কাশ্মীরে এনসি-কংগ্রেস জোট ৪১, বিজেপি ২৭, পিডিপি ৭ এবং অন্যদের ঝুলিতে ১৫টি আসন যাওয়ার সম্ভাবনা। প্রসঙ্গত, এর আগে শেষ বার জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হয়েছিল। পিডিপি ২৮, বিজেপি ২৫, এনসি ১৫, পিডিপি ১২ এবং অন্য প্রার্থীরা ৭টিতে জিতেছিলেন। এক দশকের ব্যবধানে অবশ্য পূর্ণ রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে কাশ্মীর। নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করেছিল। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে ভাগ করা হয়েছিল।

২০১৪-য় অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীরে ৮৭টি আসন ছিল। ৩৭০ বাতিল এবং রাজ্য ভাগের পরে লাদাখের ৪টি আসন বাদ পড়ে। এর পর জম্মু ও কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বে থাকা ‘ডিলিমিটেশন কমিশন’-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছিল গত বছর। সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টি বেড়েছে জম্মুতে (৩৭ থেকে ৪৩) এবং একটি কাশ্মীরে (৪৬ থেকে ৪৭)। কমিশন জানিয়েছে, ২০১১ সালের জনসংখ্যার ভিত্তিতেই আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিন্দুপ্রধান জম্মুতে মুসলিম প্রধান কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় বেশি আসন বাড়ানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement