গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে।
বিহার পুলিশের ডিজি-র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন আগেই। সেই সময় থেকেই জল্পনা চলছে, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তিনি লড়তে পারেন। সেই জল্পনা আরও উস্কে দিয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করলেন প্রাক্তন ডিজিপি গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে। দু’জনের সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজনীতিতে তাঁর যোগদান নিয়ে ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেছেন প্রাক্তন ডিজিপি।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু-তদন্তের জল গড়িয়েছে অনেক দূর। ওই ঘটনায় মাদক যোগের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর ভাই শৌভিক। অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি)। সুশান্তের মৃত্যুর এই তদন্তবিন্যাস থেকে দূরে গুপ্তেশ্বর। কিন্তু দায়িত্বে থাকাকালীন এ নিয়ে বার বারই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের হয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। তিনি সেই শীর্ষ পুলিশকর্তা যিনি নীতীশ সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রিয়া চক্রবর্তীর ‘অওকাত’ জানতে চেয়েছিলেন। এ হেন গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে গত সপ্তাহেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন ডিজিপি পদ থেকে। এর কয়েক দিনের ভিতরেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ। রাজ্যে বিধানসভা ভোট যখন দরজায় কড়া নাড়ছে ঠিক তখনই শীর্ষ পুলিশকর্তার চাকরি থেকে ইস্তফা। ঠিক যখন ভোটের বিহারে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র নির্বাচনী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু-রহস্য। স্বাভাবিক ভাবেই এমন এক জন প্রাক্তন পুলিশকর্তার সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনার পারদ চড়ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরোতেই এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন গুপ্তেশ্বর। উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। যদি তেমন কিছু হয় তা হলে সকলকে জানাব।’’
গত বুধবার একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেল-কে একটি সাক্ষাৎকারে অবশ্য ভিন্ন সুরেই গুপ্তেশ্বর বলেছিলেন, ‘‘আমি সাধারণ মানুষের ডিজিপি। জনতার ডিজিপি। বক্সারের জনতা স্থির করবে আমার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, আমি রাজনীতিতে যাব কি যাব না। আমি মাটির মানুষ। রাজ্যের ৩৪টি জেলায় আমি চাকরি করেছি।’’ এখানেই থামেননি গুপ্তেশ্বর। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘যদি আমি রাজনীতিতে যোগ দিই তা হলে ক্ষতি কী? সেটা কি অসাংবিধানিক, অনৈতিক বা বেআইনি হবে?’’
আরও পড়ুন: বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেন মুকুল রায়
আরও পড়ুন: যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র বানাবে ভারত ও ইজরায়েল
অক্টোবরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। অনেকেই বলছেন, এনডিএ-র হয়ে বক্সার জেলার শাহপুর থেকে ভোটে দাঁড়াতে পারেন প্রাক্তন ডিজিপি। ১৯৮৭-র ব্যাচের আইপিএস অফিসার গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে এর আগেও রাজনীতিতে আসতে চেয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তৎকালীন বিহার সরকারের কাছে স্বেচ্ছাবসরের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। বক্সার থেকে সে বার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। বরং নীতীশ কুমারের মধ্যস্থতায় ফের কাজে ফিরতে হয় তাঁকে। এ বার অবশ্য উল্টো ছবিই নজরে এসেছে। খাতায়কলমে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর তিন মাস কাজ করে যাওয়াটাই (কুলিং অফ পিরিয়ড) সাধারণত দস্তুর। কিন্তু গুপ্তেশ্বরকে সেই নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।