শুক্রবার লোকসভায় ঢোকার মুখে মহুয়া মৈত্র। ছবি: পিটিআই।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সম্পর্কে লোকসভার স্পিকারের কাছে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট জমা পড়বে শুক্রবার। তার আগে চেনা মেজাজে মহুয়া। লোকসভায় ঢোকার আগে তাঁর মুখে শোনা গেল কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা।
লোকসভায় মহুয়া পৌঁছলেই তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে মহুয়া বলেন, ‘‘দেখে নেব। দেখা যাবে। মা দুর্গা এসে গিয়েছে।’’
এর পরেই মহুয়া বলেন, ‘‘আমাদের বাংলায় একটা কবিতা আছে কাজী নজরুল ইসলামের। ‘অসত্যের কাছে কভু নত নাহি কর শির/ ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ, লড়ে যায় বীর।’’ নজরুল-কাব্যের এই দুই পংক্তি হিন্দিতে অনুবাদ করেও শোনান মহুয়া। তার পর বলেন, ‘‘এঁরা বস্ত্রহরণ শুরু করেছে। এ বার আপনারা মহাভারতের যুদ্ধ দেখতে পাবেন।’’
শুক্রবার বেলা ১২টায় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে মহুয়া সম্পর্কে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট জমা পড়তে চলেছে। রিপোর্ট জমা দেবেন, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকর।
লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে ওই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে রাখা হয়েছে স্পিকারের কাছে। সেই সঙ্গে এ-ও বলা হয়েছে, মহুয়াকে লোকসভার কক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও ‘একতরফা’ সিদ্ধান্ত যেন না নেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই স্পিকার জানিয়েছিলেন, এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। অর্থাৎ, মহুয়ার সাংসদ পদ থাকছে না খারিজ হচ্ছে, তা শুক্রবারেই চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে এথিক্স কমিটি যে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে, তা মোটামুটি সর্বজনবিদিত। কারণ, রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগেই কমিটির একাধিক সদস্য সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, তাঁরা কী সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তবে মহুয়া তাঁর দলের সাংসদদের পাশে পেয়েছেন। বিরোধী পরিসরেরও অনেকেই কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। লোকভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই স্পিকারকে চিঠি লিখেছিলেন এথিক্স কমিটির রিপোর্টের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া সংসদের অধিবেশন বসার আগেই বিজ়নেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকেও সরব হন অধীর। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ এথিক্স কমিটির ‘এক্তিয়ার’ নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। এখন শুক্রবার কমিটির রিপোর্ট দেখে স্পিকার কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই দেখার।