অর্থ এবং উপহার নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন তোলার অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে আবার পদক্ষেপ করল লোকসভার এথিক্স কমিটি। অভিযুক্ত সাংসদের বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে চাওয়া হয়েছে কমিটির তরফে। পাশাপাশি, মহুয়াকে ‘ঘুষ’ দেওয়ায় অভিযুক্ত দুবাইবাসী ভারতীয় শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির বিভিন্ন দেশে যাত্রার তথ্যও চেয়েছে এথিক্স কমিটি।
মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রধান দুই অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে তলব করে বৃহস্পতিবার তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেছে এথিক্স কমিটি। আগামী মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মহুয়াকে। ওই দিন বেলা ১১টায় তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তার আগেই মহুয়ার বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত তথ্য পেতে এথিক্স কমিটি তৎপর বলে লোকসভা সচিবালয়ের একটি সূত্রের খবর। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের কাছে, জানতে চাওয়া হয়েছে, কোন কোন তারিখে কোন কোন জায়গা থেকে মহুয়ার সংসদের অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করা হয়েছিল।
দানিশ আলি, উত্তম রেড্ডি, গিরিধারী যাদবের মতো এথিক্স কমিটির বিরোধী সাংসদেরা ইতিমধ্যেই এই ‘অতি তৎপরতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলেও ওই সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার কমিটির বৈঠকে সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা এমনকি, ভোটাভুটি পর্যন্ত হয়। শেষ পর্যন্ত বিজেপি সাংসদ তথা কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয়। ৬-৫ ব্যবধানে জয়ী হয় সরকারপক্ষ।
প্রসঙ্গত, নিশিকান্তের লিখিত অভিযোগ পেয়েই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এথিক্স কমিটিকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে বলেছিলেন। এর পর বৃহস্পতিবার নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের বয়ান নথিভুক্ত করার পরে তলব করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে। নিশিকান্তের দাবি, শিল্পপতি হীরানন্দানি এবং মহুয়া মিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র’ করেছেন। এই মর্মে তিনি লোকসভার স্পিকার এবং লোকপালকে চিঠি লেখেন। দাবি করেন, কোথায় কবে, কত টাকা নিয়েছেন মহুয়া— সে সব প্রমাণও হাতে রয়েছে তাঁর। এমনকি, সেই ঘুষের অঙ্ক ২ কোটি টাকা বলেও দাবি করেছেন নিশিকান্ত।
হীরানন্দানি ইতিমধ্যেই ‘হলফনামা’য় স্বীকার করেছেন যে তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তুলেছেন। মহুয়া সংসদের লগ-ইন আইডি দুবাইবাসী শিল্পপতিকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন নিশিকান্ত। সেটাও স্বীকার করেছেন হীরানন্দানি।