বাচ্চাদের স্কুলের পাঠ্য বইতেই শেখানো হয় জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা। সাধারণত গাছের উদাহরণ দিয়েই তা কচিকাচাদের মগজস্থ করা হয়ে থাকে। কিন্তু উত্তর ভারতের কিছু স্কুলের পাঠ্য বইতে বিড়ালছানা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা বলা হল। বায়ুশূন্য কোনও বাক্সে বিড়ালের বাচ্চা রেখে তা কিছুক্ষণ রেখে দেওয়া হোক। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে বিড়াল ছানাটি মরে গেছে। আর এখান থেকেই আমরা বুঝতে পারি বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের কতটা দরকার। এই শিক্ষাই দিচ্ছে সেই বই। উত্তর ভারত নয়, রাজধানী দিল্লিরও বেশ কয়েক নামজাদা স্কুলে বইটি পড়ানো হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন, চোখ, মুখ দিয়ে নাগাড়ে বের হয় রক্ত, কারণ খুঁজতে দিশাহীন চিকিত্সা বিজ্ঞান
পি পি পাবলিকেশনের পরিবেশ বিজ্ঞানের বই ‘আওয়ার গ্রিন ওয়ার্ল্ড’-এ এই বিশেষ লাইনগুলি নজরে আসে দিল্লির এক স্কুলের অভিভাবকের। ক্লাস ফোরের ছাত্রছাত্রীরা যা পড়ছে তা হল ‘কয়েক মিনিটের বেশি কোনও প্রাণীই বাতাস ছাড়া বাঁচতে পারে না। তোমরা নিজেরাও পরীক্ষা করে দেখতে পারো। দুটো কাঠের বাক্স নাও। একটি বাক্সে ছিদ্র করো অপরটি ছিদ্রশূন্য রাখো। এবার দুটোতেই বিড়াল ছানা ভরে দাও। সবশেষে বাক্সদুটো বন্ধ করো। কিছুক্ষণ পর খুলে কী দেখতে পাচ্ছ? ছিদ্রহীন বাক্সতে থাকা বিড়ালছানাটি মারা গেছে! তাই তো?’
পরিবেশ বিজ্ঞানের ওই বইয়ের বিশেষ সেই লাইনগুলো।
পি পি পাবলিকেশনের প্রবেশ গুপ্ত বলছেন “কিছুদিন আগেই এক অভিভাবক আমাদেরকে এই লাইনগুলি পাঠ্যবই থেকে কেটে দিতে বলেন। তাঁদের মতে এটি বাচ্চাদের ক্ষতি করছে। আমরা ইতিমধ্যেই ডিসট্রিবিউশন চ্যানেল থেকে বইগুলি চেয়েছি এবং চেষ্টা করছি যাতে সামনের বছর পুনরায় নতুন করে বইটি তৈরি করতে পারি। যদিও আমাদের কোনও ধারণা ছিল না যে কতগুলি স্কুল এই বইটা ব্যবহার করেছে বা করছে?”
অভিভাবকদের একটি দল ‘অ্যানিম্যাল রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস’ এর কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন। তাঁরা ‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান প্রোটেকশন অরগ্যানাইজেশন’-এও অভিযোগ জানিয়েছেন। ‘ফিয়াপো’র (FIAPO) মুখপাত্র ভিধি মাট্টা বলছেন ‘পাবলিশার্সদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে এবং তাঁরা জানিয়েছেন খুব শীঘ্রই নতুন সংস্করণে হাজির হবে এই বই।’