রাম জেঠমলানী।
ইন্দিরা ও রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৯২-এ শেয়ার কেলেঙ্কারির দুই খলনায়ক হর্ষদ মেহতা এবং কেতন পারেখের হয়ে এজলাসে দাঁড়িয়েছেন। জৈন হাওয়ালা মামলায় লালকৃষ্ণ আডবাণী ও গোখাদ্য মামলায় লালুপ্রসাদের হয়েও সওয়াল করেছেন।
তবে সব চেয়ে নজর কেড়েছিলেন জরুরি অবস্থার সময়ে আর এক আইনজীবী শান্তিভূষণকে পাশে নিয়ে ইন্দিরা সরকারের ‘বেআইনি আটক’-কে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে। বর্ষীয়ান আইনজীবী এবং বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পরিচিত রাম জেঠমলানী রবিবার মারা গেলেন ৯৫ বছর বয়সে।
স্বাধীনতার আগে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৭ বছর বয়সে আইনের ডিগ্রি লাভ করেছিলেন জেঠমলানী। কিন্তু সাবালক না-হওয়ায় আইনব্যবসা শুরু করতে এক বছর অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে। স্বাধীনতার পরে বম্বে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করা তরুণ জেঠমলানী নজর কাড়েন ১৯৫৯-এ সংবাদমাধ্যমে সাড়া ফেলা নানাবতী মামলায়। ইন্দিরা হত্যা মামলার অভিযুক্ত বলবীর সিংহকে বেকসুর খালাস করে আনতে পারলেও খেহর সিংহের প্রাণদণ্ড আটকাতে ব্যর্থ হন তিনি। রাজীব হত্যা মামলার আসামি মুরুগনের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে আদালতে বলেন, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্র-বিরোধী কোনও অপরাধই নয়।’’ সাম্প্রতিক কালেও তাঁকে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত আফজল গুরু এবং জেসিকা লাল হত্যার আসামি মনু শর্মার হয়ে আদালতে দেখা গিয়েছে।
বর্ণময় চরিত্র জেঠমলানীর আর এক পরিচিতি, তাঁর কট্টর ইন্দিরা-বিরোধিতা। জরুরি অবস্থাও তাঁর মুখ বন্ধ করতে পারেনি। সরকার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে জেঠমলানী কানাডায় গা ঢাকা দেন। ছ’বার রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকার এবং বাজপেয়ী সরকারে মন্ত্রীও হয়েছেন। ২০১৫-য় বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা করেন। দু’ বছর আগে নিজের অবসরের অনুষ্ঠানে বলেন, কংগ্রেসের মতো নরেন্দ্র মোদীর সরকারও দেশকে রসাতলে নিয়ে চলেছে। তবে তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইটে দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, ‘তাঁর বড় গুণ, মনের কথা নির্দ্বিধায় বলতেন। আর সে জন্য কাউকেই ভয় পেতেন না।’