কংগ্রেস আগেই আশঙ্কা জানিয়ে রেখেছিল। গুজরাতে রাজ্যসভার দু’টি খালি আসনে ভোটের জন্য এক সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার দাবিও জানিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু সেটা হল না। এর ফলে সে রাজ্য থেকে একটি নিশ্চিত আসন হারাতে চলেছে কংগ্রেস।
অমিত শাহ ও স্মৃতি ইরানি লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে গুজরাতে রাজ্যসভার দু’টি আসন শূন্য হয়। অমিত শাহের আসনটি শূন্য হয়েছে বলে রাজ্যসভা থেকে সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও স্মৃতির আসন শূন্য হওয়ার বিজ্ঞপ্তি রাজ্যসভা জারি করে বেশ ক’দিন দেরি করে। এর পরেই কংগ্রেসের হুঁশ হয়— অমিত শাহ কিছু একটা করতে চাইছেন। খবর নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব দেখেন, এক সঙ্গে ভোট হলে প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের ভোটে গুজরাতে একটি আসন বিজেপি ও অন্যটি কংগ্রেস পায়। কিন্তু আলাদা ভোট হলে দু’টিই বিজেপির ঝুলিতে যাবে, আর নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে সেটিই করাতে চান অমিত। এর পরেই কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে প্রথা মাফিক দুই আসনের ভোট এক সঙ্গে করার দাবি জানায়।
এর পরে শনিবার নির্বাচন কমিশন দেশের তিন রাজ্যে রাজ্যসভার ছয়টি শূন্য আসনে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। গুজরাতে দু’টি ছাড়া বিহারে একটি এবং ওড়িশায় রাজ্যসভার তিনটি আসনে ভোট হবে। কিন্তু জানানো হয়েছে, প্রতি আসনের ভোট আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে করা হবে। গুজরাত বিধানসভা ভোটের সময় রাহুল গাঁধীর সক্রিয়তায় রাজ্যের ১৮২টি আসনের মধ্যে বিজেপিকে সেঞ্চুরি পার করতে দেয়নি কংগ্রেস। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৯২টির চেয়ে মাত্র ৭টি আসন বেশি পেয়ে সরকার গড়ে মোদীর দল। পরে সংখ্যা বাড়িয়ে একশো পার করেছে তারা। কিন্তু দু’টি আসনে এক সঙ্গে নির্বাচন হলে বিধায়কদের প্রথম পছন্দের ভোট অনুসারে বিজেপি মাত্র একটিতেই জিততে পারে। দু’বারে হলে দু’টিতে।
গুজরাতে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অমিত চাভড়া নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে ‘ভুল ও অসাংবিধানিক’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘‘কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে আরও এক দফা প্রশ্ন উঠে গেল।’’ কমিশনের বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলেও জানিয়েছেন চাভড়া। তবে নির্বাচন কমিশন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগের জবাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে— ১৯৯৪ ও ২০০৯-এর দু’টি মামলায় দিল্লি হাইকোর্ট একই রাজ্যের একাধিক আসনের ভোটও আলাদা জ্ঞপ্তিতে করার যে রায় দিয়েছিল, এ ক্ষেত্রে সেটাই মানা হয়েছে। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ লোকসভায় জেতায় বিহারে রাজ্যসভার একটি আসন শূন্য হয়েছে। সেই আসনটি শরিক লোক জনশক্তি পার্টির নেতা রামবিলাস পাসোয়ানকে ছাড়ার কথা ভাবছে বিজেপি। তবে ওড়িশার আসনগুলি বিজেডির হাতেই থাকবে।