Election Commission

ভোটের কাজে কোন অফিসার, নির্দেশিকা কমিশনের

অতীতের নির্বাচনে গাফিলতির অভিযোগ থাকা কোনও অফিসারকেই ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৩৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভোটের কাজ যাঁরা করবেন, সেই অফিসারদের তালিকা তৈরির ব্যাপারে ‘অ্যাডভাইজ়রি’ পাঠাল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, কেরল ও পুদুচেরির মুখ্যসচিবকে পাঠানো ওই ‘অ্যাডভাইজ়রি’-তে বলা হয়েছে, অতীতের নির্বাচনে গাফিলতির অভিযোগ থাকা কোনও অফিসারকেই ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এ বার রাজ্যের যে তিনজন আইপিএস অফিসারকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে বদলি করেছে কেন্দ্র, তাঁদের ভোটের কাজে আদৌ ব্যবহার করা যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

Advertisement

কমিশন জানিয়েছে, অতীতে কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে কমিশন বিভাগীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করেছিল অথবা ভোট সংক্রান্ত কোনও দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ ছিল, এমন কাউকেই ভোটের কাজে রাখা যাবে না। তবে ২০১৯ সালের লোকসভার সময়ে কমিশনের সুপারিশে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা এই রদবদল প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবেন। অ্যাডভাইজ়রিতে বলা হয়েছে, নিজের জেলায় পোস্টিং-এ থাকতে পারবেন না ভোটের কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা কোনও আধিকারিক। গত চার বছরের মধ্যে তিন বছর এক জেলায় পোস্টিং থাকা অথবা ২০২১ সালের ৩১ মে-র মধ্যে তিন বছর এক জেলায় পোস্টিং-মেয়াদ পূর্ণ হওয়া আধিকারিকদেরও ভোটের কাজে রাখা যাবে না। ছ'মাসের মধ্যে অবসর নেবেন, এমন আধিকারিকদেরও দেওয়া যাবে না ভোটের

দায়িত্ব। মুখ্যসচিবদের পাশাপাশি পাঁচ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেও (সিইও) এই বার্তা দিয়েছে কমিশন।

Advertisement

আমলামহল জানাচ্ছে, সাধারণত কোনও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মাস পাঁচেক আগেই এই ধরনের অ্যাডভাইজ়রি পাঠানোর উদাহরণ রয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের বছরেই অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, ওড়িশা, সিকিমে বিধানসভা ভোট ছিল। সেই রাজ্য প্রশাসনগুলিকেও ভোটের পাঁচ মাস আগেই এই ধরনের অ্যাডভাইজ়রি পাঠিয়েছিল কমিশন।

এ দিকে, এসপি ভোলানাথ পাণ্ডে, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ প্রবীণ ত্রিপাঠী এবং এডিজি দক্ষিণবঙ্গ রাজীব মিশ্রকে গত বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে বদলি করেছে কেন্দ্র। ভোলানাথকে ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ সংস্থায় পুলিশ সুপার পদে, রাজীবকে আইটিবিপি-এর আইজি এবং প্রবীণকে এসএসবি-এর ডিআইজি পদে নিযোগ করা হয়েছে। ভোলানাথকে চার বছর ও বাকি দু’জনকে পাঁচ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ক্যাডারে থাকতে হবে। চিঠি দিয়ে ওই তিন অফিসারকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও রাজ্যকে দিয়েছে কেন্দ্র। যদিও তাঁদের এখনও ছাড়তে নারাজ রাজ্য। এ বার এই তিন অফিসার ভোটের কোনও দায়িত্বে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞমহলের দাবি, ভোটের আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পরে পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তখন দায়িত্বভাগের বিষয়টি কমিশনের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভরশীল। প্রাক্তন এক আমলার কথায়, “সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন মুখ্যসচিব বা রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অথবা নিজেরাই তা করতে পারে।”

কমিশনের তালিকা অনুসারে, জেলা নির্বাচন আধিকারিক (ডিইও), ডেপুটি ডিইও, রিটার্নিং আধিকারিক (আরও), সহকারী আরও, ইলেক্টরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও), সহকারী ইআরও অর্থাৎ জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও-সহ এ রাজ্যের সিনিয়র ডব্লিউবিসিএস রয়েছেন তালিকায়। আর পুলিশের ক্ষেত্রে, আইজি, ডিআইজি, রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের কমান্ড্যান্ট, সিনিয়র পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও, ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর-সহ ভোটের কাজে সরাসরি দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন স্তরের পুলিশ আধিকারিকদের ক্ষেত্রে এই অ্যাডভাইজ়রি প্রযোজ্য হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement