তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। — ফাইল চিত্র।
ভোটের ঠিক আগে কৃষকদের হাতে খয়রাতির টাকা তুলে দিয়ে ২০১৮ সালের ‘ছকের’ পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চেয়েছিলেন তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও। কিন্তু তাতে বাধ সাধল নির্বাচন কমিশন। সোমবার কমিশনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিধানসভা ভোটের আগে কৃষকদের রবিশস্যের অনুদান বণ্টন বন্ধ রাখতে হবে।
ভোটের আগে এমন খয়রাতি ‘নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ’ বলেও স্পষ্ট জানিয়েছে কমিশন। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেসিআর এবং তাঁর দল। কেসিআরের ভাইপো তথা তেলঙ্গানার অর্থমন্ত্রী টি হরিশ রাও ঘটনার দায় চাপিয়েছেন কংগ্রেসের ঘাড়ে। সে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের চক্রান্তেই কৃষকেরা ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন বলে অভিযোগ হরিশের। তিনি বলেন, ‘‘এআইসিসির সাধারণ সম্পাদর কে বেনুগোপাল রাও অভিযোগ জানানোর ফলেই রায়তু বন্ধু যোজনার কিস্তির টাকা বিতরণ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কেসিআর কন্যা কে কবিতা সোমবার বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন তেলঙ্গানার কৃষকেরা।’’
যদিও বিআরএস নেতৃত্বের অভিযোগ খারিজ করে বেনুগোপাল বলেন, ‘‘পরাজয় নিশ্চিত বুঝে নির্বাচনের মুখে টাকা ছড়িয়ে ভোট কিনতে চাইছেন কেসিআর।’’ প্রসঙ্গত, ‘রায়তু বন্ধু’ যোজনা ২০১৮ সালের ভোটে সাফল্য এনে দিয়েছিল বিআরএস-কে। ওই প্রকল্পে প্রতিটি কৃষককে প্রতি একর শস্য পিছু বছরে ১০ হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হয়। তা দেওয়ার কথা বছরের গোড়ায়, অর্থাৎ জানুয়ারিতে। কিন্তু গত বারের ভোটে এই নভেম্বর মাসেই কৃষিজীবী ভোটারদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়েছিল কেসিআর সরকার।
এ বারের ভোটেও সেটাই করতে সক্রিয় হয়েছিল কেসিআর সরকার। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানায়। যদিও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আর এক বিরোধী দল বিজেপি এ নিয়ে কার্যত বিআরএসের পাশে দাঁড়ায়। আগামী ৩০ নভেম্বর তেলঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনেই এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে। গণনা আগামী ৩ ডিসেম্বর দেশের অন্য চার রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মিজ়োরামের সঙ্গে। কাগজে-কলমে বিআরএস, কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে ‘ত্রিমুখী’ লড়াই হলেও বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস মূল লড়াই হতে চলেছে কেসিআর এবং রাহুল গান্ধীর দলের মধ্যে।