প্রার্থীর সঙ্গে নিজস্বী। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল মানেই চড়া মেকআপ, বাহারি পোশাক, গানের ভিডিয়ো, অধিকাংশ ছবিতেই হাতে ধরা মাইক্রোফোন। তাঁর ডাকনামই তো ভোজপুরি কুইন! কিন্তু গত কয়েক দিনে সব বদলে গিয়েছে। নেই মেকআপের আধিক্য, পরনে শুধুই মেখেলা, গলায় ফুলাম গামোসা। মঞ্চ নয়, মানুষের মধ্যেই মিশে থাকা ছবিতে, অসমীয়া কবিতায় ভরে থাকছে তাঁর ইনস্টাগ্রাম, টুইটার। হাতে ধরা মাইক্রোফোনে জনপ্রিয় ভোজপুরি বা লোকগান নয়, বলছেন রাজনীতির কথা।
অসম বিধানসভা ভোটে অগপ প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নতুন মুখ গায়িকা কল্পনা পাটোয়ারি। অসমের মেয়ে হলেও তাঁর পরিচয় মূলত ভোজপুরি গানের জন্য। নিজের সম্পর্কে কল্পনা বলেন, ৩১টি ভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছি। আমি প্রকৃত অর্থেই ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের দূত।
২০১৮ সালে পটনায় অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন কল্পনা। কিন্তু লকডাউনের সময় থেকে তাঁর মনোভাব বদলাতে থাকে। সে সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে গাওয়া তাঁর ‘ভাইয়া ও ভাইয়া’ গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যায় তীব্র ক্ষোভও জানান তিনি। বিভিন্ন সময় বিজেপি-বিরোধী মন্তব্যও শোনা যাচ্ছিল তাঁর মুখে। অসমের কৃষক নেতা অখিল গগৈকে কারাবন্দি রাখারও তীব্র সমালোচনা করেছিলেন কল্পনা। অবশেষে গত বছর অক্টোবরে তিনি বিজেপি ছেড়ে, তাদেরই শরিকদল অসম গণ পরিষদে যোগ দেন।
শিশু ও মহিলাদের সঙ্গে অগপ প্রার্থী গায়িকা কল্পনা পাটোয়ারি।
আপাতত সরুক্ষেত্রী বিধানসভা কেন্দ্রের গ্রামে গ্রামে চক্কর কাটছেন কল্পনাদেবী। শিশু ও মহিলাদের মধ্যে তিনি খুবই জনপ্রিয়। রাজনৈতিক কচকচানির মধ্যে বোনাস হিসেবে মাইকে ভাসছে তাঁর গাওয়া হিট গানের কলি। ভোজপুরি পরিচয় ঝেড়ে বরপেটিয়া হয়ে উঠতে চাওয়া ৪৩ বছরের কল্পনা বলেন, “আমি বরপেটার সরভোটের ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা মেয়ে। গুয়াহাটির কটন কলেজের জীবন শেষ করে বিহারে গিয়ে তারকা হয়ে ওঠা, মুম্বই পাড়ি দেওয়ার রাস্তায় জীবন ও খ্যাতির বিভিন্ন পর্যায় দেখেছি। কিন্তু নিজের জন্মভূমিতে ফিরে, জনতার প্রতিনিধি হয়ে ওঠার এই আবেগ একেবারে ভিন্ন।”