একনাথ শিন্ডে। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে পাহাড় ধসে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও উদ্ধারকাজ চলছে এখনও। এখনও ধস কবলিত এলাকায় ৮৬ জনের খোঁজ মেলেনি। ভয়ঙ্কর এই ধসে বহু শিশুর বাবা-মা ‘নিখোঁজ’। কারও কারও দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই আবহে অনাথ শিশুদের যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানালেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে।
এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের অন্যতম শাসকদল শিবসেনার তরফে বলা হয়েছে, “রায়গড় জেলার ইরশালওয়াড়ি গ্রামে বহু শিশু তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন যে, তিনি ওই শিশুদের দত্তক নেবেন এবং তাদের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবেন।” শিবসেনার তরফেই জানা গিয়েছে, ২ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নেবে ‘শ্রীকান্ত শিন্ডে ফাউন্ডেশন’।
মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডের পুত্র তথা মহারাষ্ট্রের কল্যাণ লোকসভার সাংসদ শ্রীকান্ত শিন্ডের নামাঙ্কিত ওই সংগঠনই শিশুগুলির পড়াশোনা, চিকিৎসা, খাদ্য-সহ যাবতীয় কিছুর ব্যয় বহন করবে। মহারাষ্ট্র প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি শিশুর পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য একটি অর্থ তহবিল তৈরি করা হবে।
রায়গড় জেলার ইরশালওয়াড়ি গ্রামে বুধবার ভোরে পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে। কাদামাটিতে বসে যায় গ্রামের একাধিক বাড়ি। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত আদিবাসী গ্রামটির ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৫ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার থেকেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছিল রায়গড়ে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বার বার তা ব্যাহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১৬। শুক্রবার তা বেড়ে ২২-এ পৌঁছয়। শনিবার আরও কয়েকটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ন’জন পুরুষ, বেশ কয়েক জন মহিলা এবং চার জন শিশু। একই পরিবারের নয় সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এই ধসে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ স্থগিত রেখেছিল। শনিবার সকালে আবার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে গ্রামবাসীদের খোঁজ শুরু হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার খরচও বহন করবে সরকার।
ইরশালওয়াড়ি গ্রামে মোট ২২৯ জন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে ১১১ জন নিরাপদে রয়েছেন। ৪৮টি বাড়ির মধ্যে অন্তত ১৭টি বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পুরোপুরি বা আংশিক চাপা পড়ে গিয়েছে।