নিখোঁজ কোটার পড়ুয়া যুবরাজ। ছবি: সংগৃহীত।
আত্মহনন নয়, এ বার পড়ুয়াদের নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত রহস্যে ফের সংবাদ শিরোনামে রাজস্থানের কোটা শহর। সেখানে শনিবার থেকে এক পড়ুয়ার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। যুবরাজ নামে বছর আঠারোর ওই পড়ুয়া শনিবার সকাল ৭টায় কোচিং ক্লাসে যাবেন বলে হস্টেল থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। রহস্যজনক ভাবে যুবরাজের মোবাইল ফোনটি হস্টেল থেকে পাওয়া গিয়েছে।
অবশ্য এই প্রথম নয়, ঠিক এক সপ্তাহ আগে একই ভাবে কোচিং ক্লাসে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বছর ষোলোর এক পড়ুয়া। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কোটা সংলগ্ন একটি জঙ্গলে ঢুকছে সে। তার পর থেকে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পর পর দু’টি ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও। জানা গিয়েছে, যুবরাজ নামের ওই পড়ুয়া ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার জন্য কোটার একটি কোচিং স্কুলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। থাকতেন শহরেরই একটি হস্টেলে। কী ভাবে তিনি হারিয়ে গেলেন, ওই পড়ুয়া অবসাদে ভুগছিলেন কি না, সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আগের নিখোঁজকাণ্ডটির তদন্তে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে ক্যাবে করে স্থানীয় মহাদেব মন্দিরে গিয়ে, সেখানে পুজো দিয়ে লাগোয়া জঙ্গলে ঢুকে যায় সন্ধ্যা নামের ওই পড়ুয়া। গত সোমবার মন্দিরের কাছ থেকে তার মোবাইল ফোন, ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জঙ্গলে তল্লাশি চালাতে বিপর্যয় মোকাবিলাকারী দলের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাজস্থানের কোটা বিখ্যাত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হিসাবে। আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসক হওয়ার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষারও ‘কোচিং হাব’ বলা হয় কোটাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা কোটায় গিয়ে সেখানে থেকে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তার সঙ্গে প্রতিযোগিতার মারাত্মক চাপও নিতে হয় তাঁদের। এই নিয়ে ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ়ও তৈরি হয়েছে।
কী ভাবে কোটার সফল ছাত্র গড়ার কারখানায় একের পর এক ছাত্র প্রবেশ করেন এবং কী ভাবে সেই প্রক্রিয়ার বলি হন অনেকে, তা নিয়ে বহু বার বহু আলোচনা হলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। গত বছর প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ২ জন করে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে কোটায়। আর নতুন বছরে দেড় মাসের মধ্যেই চার জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।