অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সহগল হোসেন। ফাইল চিত্র।
বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সম্পত্তি কী ভাবে ১০০ কোটি টাকায় পৌঁছে গেল, তা জানতে সেহগালকে তাঁর মা, স্ত্রী, শ্যালকের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় ইডি।
গত শনিবার থেকেই সহগল হোসেনকে দিল্লিতে ইডি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। গত ছয় দিনের জিজ্ঞাবাসাদের পরে ইডি আজ দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে সহগলকে আরও আট দিন নিজেদের হেফাজতে রেখে জেরা করার অনুমতি চেয়েছে। ইডি সহগলকে চাপ দিয়ে কারও নাম বলানোর চেষ্টা করছে বলে সেহগালের আইনজীবীরা অভিযোগ তুলেছেন। রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট আজ সহগলকে আরও আট দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার অনুমতি দিয়েছে। যার অর্থ, আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সহগল হোসেন দিল্লিতে ইডি-র হেফাজতেই থাকবেন। সেহগালের মা লতিফা খাতুন, স্ত্রী সোমাইয়া খন্দকার ও শ্যালক ইসলাম চৌধুরীকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা হাজির না হওয়া নতুন করে সমন পাঠানো হচ্ছে। সহগলকে তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে।
গরু পাচার মামলায় সিবিআই আগেই জানিয়েছিল, রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করলেও অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সহগল হোসেনের সম্পত্তির বহর বাড়তে থাকে। সিবিআই নিউটাউন, বোলপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় সেহগালের ফ্ল্যাট, প্রায় ২০০ বিঘা জমি, গয়না, একাধিক পাথর ভাঙার যন্ত্র, ডাম্পার, পেট্রল পাম্পের সন্ধান পেয়েছিল। সিবিআইয়ের হিসেবে এই সম্পত্তির মূল্য অন্তত ১০০ কোটি টাকা। আরও সম্পত্তি থাকতে পারে। কনস্টেবল হিসেবে সেহগালের বেতন ও তাঁর স্ত্রী-র স্কুল শিক্ষিকা হিসেবে বেতন বাবদ আয়ের সঙ্গে এই সম্পত্তির সঙ্গতি নেই। সহগলকে সিবিআই গ্রেফতার করার পরে তিনি আসানসোলের জেলে ছিলেন। সেখান থেকে গত শনিবার তাঁকে দিল্লিতে ইডি-র হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, এই সম্পত্তির উৎস কী, সেহগালের কাছে কোথা থেকে এত টাকা এল, তদন্তকারীরা সেটাই জানার চেষ্টা করছেন। সেই কারণেই তাঁর ঘনিষ্ঠ ও পরিবারের সদস্যদের মুখোমুখি বসিয়ে সহগলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডি-র আইনজীবী নীতীশ রানাও একই যুক্তি দেন। উল্টো দিকে সেহগালের আইনজীবী মনু শর্মা বলেন, ইডি সহগলকে চাপ দিয়ে কারও নাম বলানোর চেষ্টা করছে। শুধুমাত্র এক জন বড় মাপের নেতা বলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধুমাত্র তথ্য যাচাই করার জন্য ইডি সহগলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। অন্যদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ সহগলকে আরও আট দিন ইডি-র হেফাজতে রাখার অনুমতি দেন।