ED Raids

কংগ্রেসের অধিবেশনের আগে ইডি-হানা রায়পুরে

কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র বশে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের আয়োজনে বাধা তৈরি করতেই ইডি-র তল্লাশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১১
Share:

চলছে ইডি-র তল্লাশি। ছবি: পিটিআই।

শুক্রবার থেকে ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশন শুরু হবে। বৃহস্পতিবার থেকে সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা-রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা রায়পুরে পৌঁছতে শুরু করবেন। তার ঠিক তিন দিন আগে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর ও অন্যত্র কংগ্রেসের এক দল নেতার বাড়ি, দফতর-সহ ১৪টি জায়গায় হানা দিল ইডি। ভোর ৫টা থেকে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ে কয়লা লেভি দুর্নীতির তদন্তে এই তল্লাশি বলে ইডি দাবি করেছে। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র বশে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের আয়োজনে বাধা তৈরি করতেই ইডি-র তল্লাশি। সে কারণেই বেছে বেছে প্রদেশ কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ রামগোপাল আগরওয়ালের মতো রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের বাড়ি-দফতরে ইডি হানা দিয়েছে।

Advertisement

ইডি-র এই হানার পরে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বন্ধু’ শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, শেয়ার দরে কারচুপি, বিদেশে ভুঁইফোঁড় সংস্থা খুলে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ সত্ত্বেও ইডি আদানি গোষ্ঠীর দফতরে হানা দিচ্ছে না কেন? তাঁর সঙ্গে আদানির ঘনিষ্ঠতা, আদানিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে মোদী মুখ খুলছেন না কেন? কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “রায়পুরে কংগ্রেসের মহাধিবেশনের আগে ইডি-কে অপব্যবহার করে মোদী সরকারের তল্লাশি বিজেপির কাপুরুষতার পরিচয় দিল। ভারত জোড়ো যাত্রার সাফল্যের পরে প্লেনারি অধিবেশনে ২০২৪-এর রণকৌশল রায়পুরে তৈরি হবে বলে মোদী সরকার চিন্তিত। নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সামান্যতম সততা থাকলে তিনি নিজের পরম মিত্রের কেলেঙ্কারিতে তল্লাশি চালান।”

ইডি-সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, “কংগ্রেস কিছু রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। অনেক রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। ২০২৪ আসছে। আবহাওয়া বদলাবে। যে সব অফিসার আজ প্রধানমন্ত্রীর হাতের খেলনা হয়ে রয়েছেন, তাঁরা যেন আমাদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। আমরাও কখনও ক্ষমতায় আসব। যেখানে ক্ষমতায় রয়েছি, সেখানেও কিছু করে দেখাতে পারি।”

Advertisement

ইডি-র দাবি, ছত্তীসগঢ়ে রাজনীতিক, আমলা, দালাল, ব্যবসায়ীদের একটি চক্র রাজ্যে ঢোকা প্রতি টন কয়লা থেকে ২৫ টাকা করে বেআইনি লেভি আদায় করত। প্রতি বছর ৫০০ কোটি টাকা তোলা আদায় হতো। প্রদেশ কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ আগরওয়ালের পকেটে ৫২ কোটি টাকা ঢুকেছে। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের ঘনিষ্ঠ সূর্যকান্ত তিওয়ারি, মুখ্যমন্ত্রীর উপসচিব সৌম্যা চৌরাসিয়া জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে চৌরাসিয়া-সহ বেশ কয়েক জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন প্রদেশ কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ ছাড়াও বিধায়ক দেবেন্দ্র যাদব ও বেশ কয়েক জন নিগম চেয়ারম্যানের বাড়ি-দফতরে তল্লাশি চলেছে।

রায়পুরের প্লেনারি অধিবেশনে প্রায় ১৫ হাজার কংগ্রেস নেতা-নেত্রী যোগ দেবেন। নতুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি গঠন হবে। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বঘেলের বক্তব্য, “আমরা জানতাম প্লেনারির আগে তল্লাশি হবে। কিন্তু আমরা তৈরি। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, প্লেনারি সফল হবে।” কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, এর আগে ইডি দিল্লিতে সনিয়া-রাহুল গান্ধীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করেছে। কিন্তু কংগ্রেস ভয় পায়নি। এখন গোটা দেশের লোক বুঝে গিয়েছে, মোদী সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে এইসব ইডি-সিবিআইয়ের হানা-তল্লাশি চালায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement