প্রতীকী ছবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন কী ভাবে সুষ্ঠু ভাবে করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। বৈঠকে ‘সুপার স্প্রেডার’ হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক জনসভা বন্ধ রাখার বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কথা হয়েছে ভোট পিছিয়ে দেওয়া নিয়েও। যদিও এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন।
ওমিক্রন প্রজাতির কারণে দেশে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ। এই গতিতে সংক্রমণ বজায় থাকলে আগামী এক–দেড় মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে বলে এখন থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঘটনাচক্রে ওই সময়েই পাঁচ রাজ্যে ভোট হওয়ার কথা। যা সংক্রমণে আরও ইন্ধন জোগাবে বলেই মত সকলের। পাঁচ রাজ্যে ভোটের পরে দেশে করোনা সংক্রমণের চিত্র যদি আরও খারাপ দিকে মোড় নেয়, সে ক্ষেত্রে যাবতীয় দায় কমিশনের ঘাড়ে এসে পড়ার সম্ভাবনা। তা বুঝেই ভোটমুখী রাজ্যগুলির সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি, ভোটের সময়ে ভিড় এড়ানোর কী পন্থা নেওয়া যেতে পারে— তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন কমিশনের কর্তারা।
করোনা পরিস্থিতিতে যে কোনও জনসভাকে ‘সুপার স্প্রেডার’ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেই আশঙ্কাকে পাত্তা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ ত্রিপুরা ও মণিপুরে জনসভা করেছেন। আগামিকাল পঞ্জাবেও জনসভা করবেন তিনি। পাশাপাশি, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রার ডাকে বরেলীতে হওয়া মহিলাদের ম্যারথনে আজ পদপিষ্ট হয়েছেন অনেকে। ফলে আগামী দিনে এ ধরনের জনসভাগুলির অনুমতি বাতিল করা যায় কি না, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে কমিশনের বৈঠকে।
নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এ ভাবে জনসভা করতে দেওয়া হলে ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। তখন সংক্রমণের যাবতীয় দায় এড়াতে পারবে না কমিশন। তাই আগামী দিনে সমস্ত জনসভা ভার্চুয়াল করে দেওয়ার পক্ষপাতী কমিশনের একাংশ। এ ছাড়া, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া, বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারেও কম সংখ্যায় উপস্থিতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ওই নিয়ম পালনে ব্যর্থ হলে কড়া শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বৈঠকে। বলা হয়েছে, একটি বা দু’টি ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ম পালনে বাধ্য করা সম্ভব নয়।
সূত্রের মতে, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। যদিও নীতিগত ভাবে এখনও সময়ে নির্বাচন করানোর পক্ষে কমিশন। কিন্তু একাংশের মতে, প্রয়োজনে ছয় মাস পরে দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলে ভোট করানো যেতে পারে। তা হলে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য কমিশন দায়ী থাকবে না। যদিও কমিশনের অন্য অংশের মতে, তেমন হলে সময়ে ভোট করানোর যে চ্যালেঞ্জ, তা থেকে সরে আসতে হবে কমিশনকে। তার চেয়ে বরং কড়া ভাবে পালন করা হোক নির্বাচনবিধি। বাড়ানো হোক শাস্তির পরিমাণ। এই বিষয়ে রাজি হয়েছেন কমিশনের কর্তারা।