পদত্যাগী পি সি মোহনন এবং জে ভি মীনাক্ষী।—ফাইল চিত্র।
জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশন (ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল কমিশন বা এনএসসি) থেকে দুই সদস্যের পদত্যাগ ঘিরে প্রবল চাপের মুখে অবশেষে তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হল কেন্দ্র। সেখানে আবার কিছুটা পাল্টা অভিযোগের আঙুল তোলা হল পদত্যাগীদের দিকেই। প্রশ্ন তোলা হল, যে সব বিষয়ে তাঁদের ক্ষোভ তা নিয়ে গত কয়েক মাসের বৈঠকে কেন তাঁরা সরব হননি।
তবে ভোটের মুখে এই ঘটনায় যে সরকারের মুখ পুড়ছে, তা বুঝতে পেরে আজই দুই পদত্যাগী পি সি মোহনন এবং জে ভি মীনাক্ষীকে ফোন করেন পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের সচিব প্রবীণ শ্রীবাস্তব। জিজ্ঞাসা করেন সমস্যার কথা। অনুরোধ জানান মন্ত্রকে এসে বিশদে তা বলার। অর্থাৎ পাল্টা আক্রমণের পাশাপাশি এ দিন তাঁদের ক্ষোভ কমানোরও চেষ্টা করেছে কেন্দ্র।
মঙ্গলবার মূলত দু’টি অভিযোগ তুলে কমিশন ছেড়েছিলেন ওই দুই সদস্য। প্রথমত, ২০১৭-১৮ সালের জন্য ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে দফতরের (এনএসএসও) তৈরি কর্মসংস্থানের সমীক্ষায় কমিশন সিলমোহর দেওয়া সত্ত্বেও এখনও তা প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। মনে করা হচ্ছে, নোটবন্দিতে যে বহু মানুষ কাজ খুইয়েছেন সে কথা ভোটের মুখে ধামাচাপা দিতেই ওই পথ বেছেছে তারা। তবে এ দিনই আবার নোটবন্দির গুণগান গেয়ে গুজরাতে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, ওই পদক্ষেপের দৌলতেই নাকি বাড়ি-ঘর কিছুটা সস্তা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, মনমোহন জমানার জিডিপি ও বৃদ্ধির হারের সংশোধিত হিসেব মোদী সরকার যে ভাবে এনএসসি-কে ‘উপেক্ষা করে’ এবং নীতি আয়োগকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ করেছে, তাতেও খুশি নন এনএসসি সদস্যেরা। এ দিন বিবৃতিতে এই জোড়া অভিযোগ খণ্ডন করতে চেয়েছে কেন্দ্র।
মন্ত্রকের দাবি, এখন ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি ত্রৈমাসিকের তথ্য একত্রিত করছে এনএসএসও। সেই কাজ শেষ হলে রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। একইসঙ্গে কেন্দ্র ইঙ্গিত দিয়েছে,
মাঝে নিয়মিত বেরনো কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে নতুন নথিভুক্তির সংখ্যা কর্মসংস্থানের ছবি পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযোগী। জিডিপি প্রসঙ্গে তাদের দাবি, নতুন পদ্ধতিতে মনমোহন জমানার জন্য তা মাপার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিল কমিশনই। তা করাও হয়েছে ২০১১-১২ সালের ভিত্তিবর্ষের নিয়ম মেনে।
কিন্তু সব কিছুর পরেও প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে বিঁধতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘‘সরকারি ঔদাসীন্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অপমৃত্যু।...এনএসসির আত্মার শান্তি কামনা করি। যত দিন না তা আবার বেঁচে ওঠে!’’