তুষার-স্তব্ধ: প্রবল তুষারপাতে বিপর্যস্ত শ্রীনগর। প্রাণ হারিয়েছেন সাত জন। বৃহস্পতিবার। এএফপি
বিশেষ মর্যাদা খারিজের পর থেকেই ব্যাহত হয়েছে কাশ্মীরের জনজীবন। তবে গত কয়েক দিন ধরেই প্রশাসনের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, ছন্দে ফিরছে উপত্যকা। এমন সময়ে রাতভর প্রবল তুষারপাতের ফলে ফের সুনসান রাস্তাঘাট। উপত্যকার সঙ্গে দেশের অন্য প্রান্তের সংযোগকারী একমাত্র রাস্তা শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক প্রবল তুষারপাতের ফলে বন্ধ রয়েছে। শ্রীনগর বিমানবন্দরেও বাতিল করা হয়েছে সমস্ত উড়ান।
এই বিপর্যয়ে বৃহস্পতিবার প্রাণ হারিয়েছেন সাত জন। মৃতদের মধ্যে চার জন সেনাবাহিনীতে মালবহনের কাজ করতেন। পরিষেবা স্বাভাবিক করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন পর্ষদের এক কর্মীরও। তাঁর পরিজনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে শ্রীনগর জেলা প্রশাসন। গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই পথচারীর।
কাল রাত থেকে শুরু হয়ে আজও একটানা হয়ে চলেছে তুষারপাত। রাত থেকেই বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। প্রধান সড়কের পাশাপাশি ছোট রাস্তাগুলিও বরফের নীচে। বিভিন্ন অঞ্চলে ভেঙে পড়েছে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, একটানা তুষারের ফলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বা যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বরফ সাফাইয়ের জন্য রাস্তায় নামানো হয়েছে ৪৫টি যন্ত্র। রাস্তার জমা জল পরিষ্কারের জন্য জেনারেটরের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে পাম্প।
কাল সকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। মৌসম ভবন জানিয়েছে, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার সক্রিয়তা ও ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’র প্রভাবে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে তুষারপাত। সকাল সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত শ্রীনগর ও কাজিগুন্দে তুষারপাত হয়েছে যথাক্রমে ১১ ও ১২ সেন্টিমিটার। গুলমার্গে তুষারপাতের পরিমাণ ৬২ সেন্টিমিটার। গুলমার্গের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ০.৫ ডিগ্রি ও মাইনাস ২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীনগরেও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে। জম্মুর কিস্তওয়ার, ডোডা, রামবন, রাজৌরি, পুঞ্চ ও কাঠুয়াও তুষারপাতের কবলে পড়েছে।
আজ শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক বন্ধ হওয়ায় রাস্তায় দাড়িয়ে প্রায় দু’হাজারের বেশি গাড়ি। দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানের সঙ্গে পুঞ্চের সংযোগকারী মুঘল রোডও সম্পূর্ণ বন্ধ। বিপর্যস্ত শ্রীনগর-লে, বান্দুপোরা-গুরেজ়, কুপওয়াড়া-টাংধর সড়ক।