প্রতীকী ছবি।
অতিমারি ঠেকাতে গিয়ে স্বাস্থ্যরক্ষার অন্য ঢাল-তলোয়ারগুলিকে ভুলতে বসেছে ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশের সরকার— বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এ ব্যাপারে সতর্ক করল। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্টের উল্লেখ করে তারা জানিয়েছে, ভারত এবং আরও চারটি দেশে অন্তত আড়াই কোটি শিশু জীবনদায়ী টিকা পায়নি। ফলে সময়ে টিকা না পাওয়ায় গত এক বছর এই দেশগুলিতে হাম, পোলিওর মতো রোগ নতুন করে ছড়াতে শুরু করেছে। যা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্টেও।
কেন বাড়ছে উদ্বেগ? রিপোর্ট বলছে, ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার (টিটেনাস) এবং হুপিং কাশি (পার্তুসিসের) মতো রোগ ঠেকাতে যে তিনটি টিকা দেওয়া হয় শিশুদের, যাকে একত্রে ‘ডিটিপিথ্রি’ বলে, তা ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কম করে ৫ শতাংশ কমেছে। অথচ এই ‘ডিটিপিথ্রি’ টিকাই যে কোনও দেশের দেশবাসীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভিত তৈরি করে।
তথ্যটি গভীর উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন হু-র প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রেয়িসুস। তিনি এ-ও বলেছেন, ‘‘অতিমারি নিয়ে সতর্কতা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। তবে তার পাশাপাশি অন্য রোগগুলিকে অবহেলা করলে চলবে না। কোভিড মোকাবিলার সঙ্গে হাত ধরাধরি করেই হাম, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়ার মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইকেও টিকিয়ে রাখতে হবে।’’
রিপোর্টে বলা হয়েছে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলিতে ‘ডিটিপিথ্রি’ টিকা দেওয়া কমেছে সবচেয়ে বেশি। গত দু’বছরে শুধু এই এলাকায় ৯ শতাংশ কমেছে শিশুদের জীবনদায়ী টিকাকরণ। ভারত, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া এবং ফিলিপিন্সে গত এক বছরে এক ফোঁটা টিকাও পায়নি প্রায় দু’কোটি শিশু। শিশু-স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানকে ‘বিপদ সঙ্কেত’ বলেও উল্লেখ করেছেন ইউনিসেফের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর।
এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে মূলত দায়ী করা হয়েছে তথ্যভ্রান্তি এবং জোগানের অভাবকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিমারি ঠেকাতে গিয়ে টিকা উৎপাদনকারীরা মূলত জোর দিয়েছে করোনার টিকা বানানোয়, যার প্রভাব পড়েছে নবজাতকদের দেওয়া এই জীবনদায়ী টিকার জোগানে।