প্রতীকী ছবি।
মাদক পাচার করা হবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। তার জন্য গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরে মাদক পাচারকারীরা মহড়া চালিয়েছিল মাস তিনেক আগে ৯ জুন। সেই মহড়া চালানোর খবর থেকে পাওয়া তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই মুন্দ্রা বন্দরে তিন হাজার কিলোগ্রাম আফগান হেরোইন আটকের তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টালিজেন্স (ডিআরআই)। তাদের সাহায্য করেছে তিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আইবি, ‘র’ এবং এনআইএ। সেই তদন্ত থেকে সামনে এসেছে মাদক কারবারীদের পরিচয় থেকে তাদের আর্থিক লেনদেন-সহ বহু তথ্য।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি মুন্দ্রা বন্দরে তিন হাজার কিলোগ্রাম মাদক আটক করে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের কর্তারা। মাদকের দু’টি কন্টেনার আটক করেন তাঁরা। একটি কন্টেনারে প্রায় দু’হাজার কিলোগ্রাম এবং অন্যটিতে প্রায় হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন ছিল। ডিআরআই সূত্রে খবর, প্রাথমিত তদন্তে জানা গিয়েছিল, আটক হওয়া ওই হেরোইনের আনুমানিক বাজারদর প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকা। ছয় দিন পরে জানা যায় ওই মাদকের বাজারদর প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় দুই আফগান নাগরিককে গ্রেফতার করে ডিআরআই। সূত্রের খবর, এই দু’জন আফগানিস্তান-পাকিস্তান মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত। এই দু’জন ছাড়াও আরও এক ব্যক্তি মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই তৃতীয় অভিযুক্ত জুন মাসেই ভারত থেকে আফগানিস্তানে পালিয়েছে। আফগানিস্তান হয়ে ইরানের বন্দর-এ-আব্বাসে জাহাজে তোলা হয় মাদকের কন্টেনার দু’টি। এসে পৌঁছয় মুন্দ্রা বন্দরে। বিজয়ওয়াড়ার আশি ট্রেডিং সংস্থা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ওই দুই কন্টেনারে তারা ট্যালকম পাউডারের কাঁচামাল আমদানি করছে। সূত্রের আরও খবর, এর আগে ১৭ কিলোগ্রাম মাদক-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পঞ্জাব পুলিশ। এই গ্রেফতারিও মুন্দ্রা বন্দরের মাদক আটক সম্পর্কিত। তবে ধৃত ব্যক্তির দাবি, ওই হেরোইনের গন্তব্য সে জানত না। সে শুধু পাচারের কাজে কিছু সাহায্য করেছে।
মুন্দ্রা বন্দর পরিচালনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির আদানি গোষ্ঠী। সেই বন্দরে এত বিপুল পরিমাণে হেরোইন উদ্ধার হওয়ায় শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। এর মধ্যে মাদক যোগের অভিযোগে এনসিবি-র হাতে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান গ্রেফতার হওয়ায় এই রাজনৈতিক তরজা আরও গতি পেয়েছে। বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে কংগ্রেসের দাবি, আদানি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রাধীন মুন্দ্রা বন্দরে তিন হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন আটকের ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই এনসিবি অভিযান চালিয়েছে। আরিয়ানের গ্রেফতারির পরে বলিউডের সঙ্গে মাদক যোগের ব্যাপারটি ফের সামনে এসেছে। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেই নতুন করে তদন্তে নামে এনসিবি।