কোটায় পড়তে গিয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে অনেক পড়ুয়া। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
রাজস্থানের কোটায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চিন্তিত প্রশাসন। নানা পদক্ষেপও করা হয়েছে এই প্রবণতা কমানোর জন্য। তবে এ বার কোটায় পড়ুয়াদের মধ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে অন্য এক প্রবণতা। তা হল মাদকাসক্তি।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে কোটার বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে প্রতি বছর বহু সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পড়তে যায়। তাদের একটা বড় অংশ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে মাদক সরবরাহ করার অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কোটার এসপি অমৃতা দুহান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মাদক সরবরাহের অভিযোগে কোটায় ১২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু সরবরাহ করা নয়, ছাত্রছাত্রীদের মাদক নিতে উৎসাহ দেওয়া, তাদের রাজি করানোর কাজও করেছেন অভিযুক্তেরা। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হেরোইন, চরস, গাঁজা এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ মাদক।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, যে কারণে কোটায় পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হয়, মাদকাসক্তির নেপথ্যেও সেই একই কারণ কাজ করছে। দূরদূরান্ত থেকে বাবা-মা, পরিবার ছেড়ে কমবয়সি ছেলেমেয়েরা কোটায় যায়। সেখানে নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় তাদের। সঙ্গে থাকে পড়াশোনার চাপ, প্রত্যাশাপূরণের চাপ এবং সমবয়সিদের মধ্যে প্রতিযোগিতার চাপ। এর ফলে অনেকেই একাকীত্বে ভুগতে শুরু করে। তা থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে কেউ কেউ বেছে নিতে শুরু করেছে মাদককে।
গত বছর কোটায় মোট ২৭ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছিল। তার আগের বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১৫। চলতি বছরে ইতিমধ্যে ১৪ জন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। রাজস্থান সরকারের তরফে একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কোটার জন্য। ১৬ বছরের কমবয়সিদের ভর্তির উপর বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে।