Droupadi Murmu

জনজাতি-উন্নয়নের খতিয়ান বক্তৃতায়

চলতি বছরে জম্মু-কাশ্মীর-সহ দশ রাজ্যে নির্বাচন। যার মধ্যে ভোট রয়েছে জনজাতি অধ্যুষিত উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও মিজোরামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফাইল চিত্র।

দেশের প্রথম জনজাতি ব্যক্তিত্ব হিসেবে আজ সংসদের বাজেট অধিবেশনের শুরুতে বক্তৃতা দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সামনেই দশ রাজ্যে ভোট। রাজনীতিকদের মতে, দ্রৌপদীকে সামনে রেখে জনজাতি সমাজের মন তথা ভোট জয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।

Advertisement

দ্রৌপদীকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার মাধ্যমে জনজাতিপ্রধান এলাকায় তাঁকে প্রচারের হাতিয়ার করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের ইতিহাসে বিজেপিই যে প্রথম এক জন জনজাতি সমাজের প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে, সেই বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করার কৌশল নিয়েছে দল। দলের ব্যাখ্যা এর পিছনে কাজ করছে ভোটের অঙ্ক।

চলতি বছরে জম্মু-কাশ্মীর-সহ দশ রাজ্যে নির্বাচন। যার মধ্যে ভোট রয়েছে জনজাতি অধ্যুষিত উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও মিজোরামে। এর মধ্যে প্রথম তিনটি রাজ্যে ইতিমধ্যেই ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া বাকি রাজ্যগুলির মধ্যে ছত্তীসগঢ় জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্য। পার্শ্ববর্তী মধ্যপ্রদেশে কিংবা রাজস্থানেও বড় সংখ্যক ভোটার জনজাতি সমাজের। তাই রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদীকে তুলে ধরে ওই সব রাজ্যেও জনজাতিদের ক্ষমতায়নের বিষয়টি তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। দেশের লোকসভা আসনের মধ্যেও ৪৭টি আসন জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। দ্রৌপদীকে প্রচারের হাতিয়ার করে ওই আসনগুলিতেও জেতার পরিকল্পনা নিয়েছেন মোদী-অমিত শাহেরা।

Advertisement

আজ নিজের বক্তব্যেও জনজাতিদের উন্নয়নের প্রশ্নে মোদী সরকার কতটা আন্তরিক তা বারংবার তুলে ধরেন দ্রৌপদী। বলেন, ‘‘এই সরকার দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পড়া ও জনজাতি সম্প্রদায়ের ইচ্ছাপূরণ করার সঙ্গেই তাঁদের স্বপ্ন দেখার সাহস দেখিয়েছে। এই আমলে বঞ্চিত জনগোষ্ঠী ও অনুন্নত, প্রান্তিক অঞ্চল বিশেষত দেশের জনজাতি অধ্যুষিত পার্বত্য, উপকূলীয় ও সীমান্তবর্তী এলাকার উন্নয়নে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। এই আমলেই প্রথম বার দেশে বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী জনজাতি গৌরব দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়েছে। প্রথম বার মানগড় ধামে জনজাতি সমাজের বিপ্লবীদের সম্মান জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ গ্রাম যোজনায় ৩৬ হাজারের বেশি জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামের উন্নয়ন হয়েছে। জনজাতি এলাকায় চারশোটির বেশি একলব্য মডেল স্কুল খুলেছে সরকার। জনজাতি ও পিছিয়ে পড়াদের জীবিকার কথা মাথায় রেখে তিন হাজারের বেশি ধন বিকাশ কেন্দ্র গড়া হয়েছে। বানজারা, যাযাবর সম্প্রদায়ের কল্যাণের লক্ষ্যে উন্নয়ন বোর্ড গড়েছে সরকার।’’

দ্রৌপদীকে সামনে রেখে জনজাতি ভোট কুড়োনোর প্রচেষ্টা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেস নেতা রশিদ অলভির মতে, ‘‘এই সরকার জনজাতি সমাজের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। উন্নয়নের নামে তাঁদের উদ্বাস্তু করছে। মানুষ এদের চিনে গিয়েছেন।’’ বিরোধীদের মতে, অতীতে আব্দুল কালাম বা রামনাথ কোবিন্দ যথাক্রমে মুসলিম ও দলিত সমাজের প্রতিনিধি ছিলেন। তাঁদের রাষ্ট্রপতি হওয়াতে কি আদৌ ওই দুই সমাজের কোনও উন্নয়ন হয়েছে! সবটাই ভোটের অঙ্ক, বুঝে গিয়েছেন মানুষ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement