Droupadi Murmu

নজরে ভোট, উঠল চার শ্রেণির উন্নয়নের কথা

লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ওই চার শ্রেণিকে কী ভাবে বিজেপির ছাতার তলায় নিয়ে আসা সম্ভব হয় তা ঠিক করতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৪২
Share:

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ছবি: পিটিআই।

এক দিকে রামমন্দিরের মাধ্যমে হিন্দু ভাবাবেগকে উস্কে দিতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্য দিকে গরিব, যুব সমাজ, কৃষক ও নারীদের সমর্থন ভোট বাক্সে নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর তারা। তাই আজ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে ওই চার শ্রেণির কথা। বিশেষত কী ভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই চার শ্রেণির জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করার পথে সরকার এগিয়েছে তা তুলে ধরা হয় রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের মাধ্যমে।

Advertisement

আজ অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি মুর্মু প্রথামাফিক যে বক্তব্য রাখেন তাতে তিনি বলেন, বিকশিত ভারত চারটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। যুব সমাজ, মহিলা, কৃষক ও গরিব। যাঁদের স্বপ্ন পূরণ নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে মোদী সরকার। পিছিয়ে পড়া বা গরিবদের উন্নয়নে সরকারের কাজের বিবরণ তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি জানান, মোদী সরকারের আমলে ৪ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ নিজেদের পাকা ঘর পেয়েছেন। যার পিছনে সরকারের খরচ হয়েছে ৬ লক্ষ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বার ১১ কোটি গ্রামীণ পরিবারের কাছে পানীয় জল পৌঁছেছে। এর ফলে কমেছে স্বাস্থ্যজনিত চিকিৎসা খরচ। উজ্জ্বলা প্রকল্পের আওতায় গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন ১০ কোটি মানুষ। যাঁদের সস্তা দামে গ্যাস সরবরাহ করেছে সরকার। করোনা অতিমারির সময়ে ৮০ কোটি মানুষকে বিনা মূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। যে যোজনার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরও পাঁচ বছর। দ্রৌপদী বলেন, ‘‘এই সরকারের অগ্রাধিকার হল ১০ কোটি ছোট কৃষক। যাঁদের হাতে অর্থের জোগান বাড়াতে পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে এখন পর্যন্ত কৃষকদের মধ্যে বন্টন করা হয়েছে ২.৮০ লক্ষ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় খরচ করা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।’’ বেড়েছে কৃষি ঋণ গ্রহীতার সংখ্যাও। বেড়েছে কৃষি পণ্যের সহায়ক মূল্যও।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মহিলা সমাজের ভোটকে অন্যতম পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই কারণেই বিশেষ অধিবেশন ডেকে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নারী শক্তির ক্ষমতায়নের বার্তা দিতে চেয়েছেন গোটা দেশের নারী সমাজকে। আজ বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় আগামী দিনে মূলত নারী শক্তির ক্ষমতায়নের উপরে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সূচনা করেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে দেশের নারীরা শক্তি, ক্ষমতা ও শৌর্যের পরিচয় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদী মুর্মু কিংবা নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশের মাধ্যমে নারী শক্তিকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’’ দ্রৌপদী বলেন, আজ দেশের ১০ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাবলম্বী হয়েছেন। মহিলাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২ থেকে ২৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া সেনা ও আধাসেনার উচ্চ পদে মহিলাদের নিয়োগ বেড়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপতি। পাশাপাশি যুব শক্তির কথা মাথায় রেখে শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন শিক্ষা নীতি, বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপরে যেমন জোর দেওয়া হয়েছে তেমনই সাম্প্রতিক সময়ে ইঞ্জিনিয়ারি‌ং‌ ও মেডিক্যালে আসন বাড়ানো হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপতি। পর্যটন ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। যাঁরা খেলাধুলোয় উৎসাহী তাঁদের জন্য সুযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ওই চার শ্রেণিকে কী ভাবে বিজেপির ছাতার তলায় নিয়ে আসা সম্ভব হয় তা ঠিক করতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ওই কমিটির কাজ হল বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রথম বারের ভোটার তরুণ ও যুব সমাজের কাছে পৌঁছনো। মহিলা ও গরিবেরা কেন্দ্রের সরকারি প্রকল্পের ফায়দা পাচ্ছেন কি না, কৃষকেরা বিমা-সার বা ফসলের সঠিক দাম পাচ্ছেন কি না সেই সব খতিয়ে দেখা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement