রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ছবি: পিটিআই।
গত আড়াই বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব লাদাখে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ ভারতের চিন-নীতিকেই কার্যত বদলে দিয়েছে বলে দাবি করছেন বিরোধী এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ভারতের ভূখণ্ডে বসে আছে লাল ফৌজ। কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ে দফায় দফায় আলোচনার পরেও বরফ গলানো যায়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই দেওয়া বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দাবি করলেন, ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা— সব ধরনের হামলার সমুচিত জবাব দিয়েছে সরকার। তাঁর বক্তব্য, আত্মবিশ্বাসের শীর্ষে থাকা ভারতকে অন্য নজরে দেখছেন বিশ্ববাসী।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিন নিয়ে মোদী সরকার এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বাগ্যুদ্ধের মধ্যে রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য কিছুটা আলোড়ন তৈরি করল। দ্রৌপদী মুর্মু-র কথায়, “সব বিষয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতে পারঙ্গম আমার সরকার দেশের স্বার্থকে সর্বাগ্রে রেখেছে। তা সে সার্জিকাল স্ট্রাইক, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হওয়াই হোক অথবা নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা— যে কোনও ধরনের হামলার সমুচিত জবাব দেওয়াই হোক।” প্রসঙ্গত, গত সংসদীয় অধিবেশনেই চিন প্রসঙ্গে কক্ষের ভিতরে এবং বাইরে সরব হয়েছিল কংগ্রেস। বিরোধীদের দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনের আগ্রাসনের ব্যাখ্যা দিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আজ তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “ভারত এমন একটি দেশ হিসাবে ক্রমশ উঠে এসেছে যারা আজকের বিভাজিত বিশ্বকে কোনও না কোনও ভাবে সংযুক্ত করতে সক্ষম। আন্তর্জাতিক গণবণ্টন ব্যবস্থার উপর আবারও আস্থা ফিরিয়ে আনতে যে ক’টি দেশ কাজ করছে, তার মধ্যে অন্যতম ভারত। বিশ্ব আজ বিপুল আশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ভারতের দিকে।” কয়েক দিন আগেই প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত যে সম্মান অর্জন করেছে, তারই ফলস্বরূপ ভারতের নতুন দায়িত্ব মিলেছে। যেমন জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব করছে ভারত। যদিও নিয়মমাফিকই ওই গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেয়েছে ভারত। আজ রাষ্ট্রপতির বক্তব্য, “জি ২০-কে কেবলমাত্র কূটনৈতিক সম্মেলন হিসাবেই দেখছে না ভারত। দেশের শক্তি এবং সংস্কৃতি বিশ্বদরবারে প্রদর্শন করার সুযোগ হিসাবেই দেখছে।”