মঙ্গলবার গভীর রাতে মথুরা জেল থেকে ছাড়া পেলেন চিকিৎসক কাফিল খান। (আরও খবর পৃঃ ৬) পিটিআই
মথুরা জেল থেকে বেরিয়েই যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে কটাক্ষ করে কাফিল খান বললেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সকে ধন্যবাদ। কারণ, এনকাউন্টার করে বিকাশ দুবের মতো ওরা আমাকে মেরে ফেলেনি।’’
ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের পরে জাতীয় সুরক্ষা আইনে বন্দি চিকিৎসক কাফিল খানকে গত কাল গভীর রাতে মুক্তি দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তার পরেই যোগীর পুলিশের অত্যাচার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন কাফিল। অভিযোগ এনেছেন, টানা পাঁচ দিন তাঁকে অভুক্ত রাখা হয়েছিল। এমনকি, জেলের ভিতরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে তাঁকে। যোগী সরকারকে নিশানা করে কাফিলের মন্তব্য, ‘‘রামায়ণে মহর্ষি বাল্মিকী বলেছিলেন, রাজাকে রাজধর্ম পালন করতে হবে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে রাজা রাজধর্ম পালন তো করছেনই না, উল্টে শিশুদের মতো জেদাজেদি করছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন আমাকে মুক্তি দিতে চায়নি, তবে এমন রায় দেওয়ার জন্য বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর ধন্যবাদ জানাচ্ছি দেশের মানুষকে, যাঁরা আমার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন।’’ তবে কাফিলের আশঙ্কা, এর পরেও রাজ্য সরকার তাঁকে হয়তো ভুয়ো মামলায় ফাঁসাতে পারে।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরে গত জানুয়ারি মাসে জেলে পাঠানো হয় কাফিলকে। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু গত কাল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট কাফিলের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কাফিলের বক্তৃতায় হিংসা ছড়িয়েছে, সে কথাও মেনে নেয়নি আদালত। বন্দি চিকিৎসকের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সমাজবাদী পার্টির নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও কাফিলের মুক্তির রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর টুইট, ‘‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে, এমন সকলেই কাফিল খানকে মুক্তি দিতে আদালতের রায়কে স্বাগত জানাবেন। তবে আজম খানের মতো নেতাকেও মিথ্যে মামলা দিয়ে জেলে আটকানো হয়েছে। আশাকরি তিনিও সুবিচার পাবেন।’’ এএমইউ রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষেও রায়কে স্বাগত জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাফিলের মুক্তির পিছনে নাছোড় মা
মুক্তির পরে কাফিল অভিযোগ এনেছেন, গোরক্ষপুরে বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেনের অভাবে ৭০ জন শিশুর মত্যুর ঘটনা ভুলে যেতে এবং এ নিয়ে মুখ না খোলার জন্য জেলে তাঁর উপরে বারবার চাপসৃষ্টি করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘চোখের সামনে শিশুদের যে ভাবে মরতে দেখেছি, তা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।’’