দুর্ঘটনায় দু’টুকরো বিমান।
কেরলের কোঝিকোড়ের বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন বুরো (এএআইবি)। এর মাঝেই বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ভিন্ন সম্ভাবনার কথা উসকে দিলেন ডিরেক্টরেট অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের অধিকর্তা অরুণ কুমার। তাঁর মতে, হয়তো বিমান মাটি স্পর্শ করতে দেরি করাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদপত্র ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অরুণ কুমার বলেছেন, ‘‘আমরা বিশেষ কিছু জানি না। তদন্ত চলছে। তদন্তকারীরা ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার পেয়েছেন। তাঁরা এগুলি পরীক্ষা করবেন এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর থেকে পাওয়া নথিও খতিয়ে দেখবেন। আমরা যেটা জানতে পেরেছি সেটা হল, বিমানেটর মাটি স্পর্শ (টাচডাউন) করতে দেরি হয়েছিল। সে সময় বিমানটির এটিসিকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা ৩ হাজার ফুট উপরে ছিল। তারা ৩ হাজার, ৪ হাজার না ২ হাজার ফুট উপরে ছিল, তা ওই নথি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে।’’
কোঝিকোড়ের এই বিমানবন্দর ‘টেবল টপ’ হওয়ায় বিমান ওঠানামা করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে শুক্রবার ছিল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এই প্রসঙ্গেই অরুণ কুমার বলছেন, ‘‘কোঝিকোড়ের রানওনে ৯ হাজার ফুট লম্বা। এটা মোটেই ছোট রানওয়ে নয়। পটনা বিমানবন্দরের রানওয়ে মাত্র ৬ হাজার ফুটের।’’ অরুণ কুমারের দাবি, ‘‘ওই রানওয়েটি বড় বিমান ওঠা-নামার জন্যও উপযুক্ত। একটা ছোট বিমানের ক্ষেত্রে কখনই রানওয়ের দৈর্ঘ্য নিয়ে অভিযোগ মেনে নেওয়া যায় না।’’ এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেছেন, ‘‘ধরুন একটা ১২ হাজার ফুট রানওয়ে রয়েছে। কিন্তু আপনার বিমান ৮ হাজার ফুট অতিক্রম করে সেটা স্পর্শ করল, তা হলে আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন।’’
আরও পড়ুন: বাবা এবং ভাইয়ের সঙ্গে ফের ইডির দফতরে রিয়া, চলছে জেরা
এই সূত্র ধরেই কী ভাবে সে দিন দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেই ছবি আঁকার চেষ্টা করেছেন অরুণ কুমার। তাঁর মতে, ‘‘বিমান দেরিতে মাটি স্পর্শ করেছিল এবং তার চাকা পিছলে রানওয়ে এবং সেফটি জোনের বাইরে চলে গিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সৌভাগ্যক্রমে বিমানটি বেশি দূর যায়নি। ১০ ফুট এগিয়ে গিয়েছিল। তার ফলে এটা তিন টুকরো হয়ে গিয়েছিল। এটা আরও দূরে চলে যেতে পারত। আরও ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’’
আরও পড়ুন: সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশ, দেশে মোট আক্রান্ত ২২ লক্ষ ছাড়াল
কী কারণে বিমানটির মাটি স্পর্শ করতে দেরি হয়েছিল? তা নিয়ে অবশ্য কিছু জানাননি অরুণ কুমার। তাঁর মতে, প্রমাণ হাতে না আসা পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কোঝিকোড়ের বিমান দুর্ঘটনার পর টেবলটপ বিমানবন্দর নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। অরুণ কুমার অবশ্য বলছেন, ‘‘আমেরিকা, ইউরোপ এবং সারা বিশ্বেই টেবলটপ রানওয়ের চল রয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের কথাও তুলে ধরেছেন তিনি।