মোদীর বিরুদ্ধে নয়, মোদীকে নিয়েই লড়াই জমেছে কংগ্রেসের মধ্যে।
বিতর্ক শুরু করেছিলেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ। বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদীকে সব সময়ে ‘খলনায়ক’ প্রতিপন্ন করাটা উচিত নয়। এতে কংগ্রেসের সমালোচনার ধার কমবে। অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, শশী তারুরের মতো নেতারাও একে একে জয়রামের বক্তব্যের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। এআইসিসি এমন বক্তব্যকে সমর্থন করেনি। এ বারে দলের আর এক প্রবীণ নেতা বীরাপ্পা মইলি সরব হলেন জয়রাম-শশীদের বিরুদ্ধে।
মইলির বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আদৌ প্রধানমন্ত্রীকে খলনায়ক প্রতিপন্ন করেনি। জয়রামের মতো নেতারা এ ধরনের মন্তব্য করে বিজেপির সঙ্গেই আপস করছেন। এতে দল ও তার নেতৃত্বের কোনও উপকার হচ্ছে না। হাইকমান্ডের উচিত এই সব নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা।’’ এখানেই থেমে থাকেননি মইলি। মনমোহন সিংহের দ্বিতীয় সরকারে ‘নীতিপঙ্গুত্ব’-এর জন্যও সরাসরি দায়ী করেন জয়রামকে। শশী তারুরকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মইলি। তাঁর মতে, ‘‘শশী আদৌ পরিণত রাজনীতিক নন। প্রচারে থাকতে মাঝেমধ্যেই এমন বিবৃতি দিয়ে থাকেন। একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয় তাঁর মন্তব্যকে।’’ গত কাল রাহুল গাঁধী কেরলে পৌঁছনোর পরে সে রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতি মুল্লাপল্লী রামচন্দ্রন তারুরের মন্তব্যের ব্যাখ্যা চান। রামচন্দ্রন বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে দলের অবস্থান রাহুল গাঁধী আগেই স্পষ্ট করেছেন। সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ মোদীর সরকার। এর পরে মোদীর প্রশংসা করা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার শামিল। এটি শৃঙ্খলাভঙ্গও।’’
জয়রামের প্রতিক্রিয়া এখনও না এলেও শশী গর্জে উঠেছেন। যে ভাবে তাঁর ব্যাখ্যা চাওয়ার খবর কেরল কংগ্রেস চাউর করেছে, সেই প্রেক্ষাপটে প্রকাশ্যেই তিনি বলেন, ‘‘ব্যাখ্যা চাওয়ার পরে একটি জবাবও আমি দিয়েছি। কিন্তু আমার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার খবর ফাঁস করা হয়েছে, অথচ আমার জবাবের খবরটি বলা হয়নি। দয়া করে আমার জবাবটিও ফাঁস করলে বাধিত হব। তাতে ভারসাম্য বজায় থাকে ও বিষয়টি সুষ্ঠু হয়।’’
কংগ্রেসের একাধিক নেতা বলছেন, ‘‘দলে অধিক গণতন্ত্রই কাল। যে যখন যা খুশি বলতে পারেন। নেতৃত্বের রাশও নেই, শৃঙ্খলা বলেও কিছু নেই।’’ কিন্তু দলেরই আর এক গোষ্ঠীর বক্তব্য— বিষয়টি যত লঘু করা হবে, তত ক্ষতি। রাহুল গাঁধীরা এখনও বুঝতে পারছেন না, লোকসভা নির্বাচনে হারতে হয়েছে কেন। মোদীর অন্ধ-বিরোধিতা করার পরিণতি গত দু’টি ভোটে স্পষ্ট। আজ রাহুল গাঁধীকেও জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে মোদীর দেশভক্তির অবস্থানে আসতে হয়েছে। সেই এলেন, কিন্তু অনেক দেরিতে।