ডিএমকে সাংসদ এস সেন্থিলকুমার। ছবি: এক্স।
সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের রেশ কাটার আগেই নতুন বিতর্ক বাধিয়ে বসলেন ডিএমকে সাংসদ এস সেন্থিলকুমার। সনাতন-বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে শীর্ষ নেতা এম কে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি। এ বার তাঁর দলেরই সাংসদ সেন্থিলকুমার গো-বলয়ের রাজ্যগুলিকে ‘গোমূত্র রাজ্য’ বলেছেন। পত্রপাঠ আক্রমণে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র অন্যতম শরিক ডিএমকের নেতার এই বক্তব্য থেকে গোড়াতেই দূরত্ব তৈরির কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস।
সদ্য যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে গো-বলয়ের তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে জিতেছে বিজেপি। সাধারণত ওই তিন রাজ্য ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ ও বিহারকে গো-বলয়ের রাজ্য হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। আজ লোকসভায় জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধনী) বিল নিয়ে বলতে উঠে সেন্থিল বলেন, ‘‘দেশের মানুষকে বুঝতে হবে, বিজেপি কেবল হিন্দিভাষী রাজ্যগুলি থেকে জিতছে— যাদের আমরা গোমূত্র রাজ্য বলে থাকি।’’
সেন্থিলের কথার প্রতিবাদ করেন বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষি লেখি। বলেন, ‘‘এই বক্তব্য সনাতন ঐতিহ্যের প্রতি অসম্মান। অতীতেও এঁরা সনাতন ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন। ফল কী হয়েছে, সবাই দেখেছে।’’ উদয়নিধির মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক ধামাচাপা দিতে মুখ খুলতে হয়েছিল খোদ স্ট্যালিনকে। তা সত্ত্বেও ডিএমকের জোট-শরিক হওয়ায় কংগ্রেসকে এর খেসারত দিতে হয়েছে গো-বলয়ের তিন রাজ্যের ভোটে। সনাতন-বিতর্ক নিয়ে বিজেপির মেরুকরণের সেই কৌশলের সাফল্যের কথা মানতে বাধ্য হচ্ছেন কংগ্রেস নেতারাই। তাই সেন্থিলের মন্তব্য সামনে আসতেই তা থেকে দূরত্ব তৈরিতে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। দলের নেতা রাজীব শুক্ল বলেছেন, ‘‘আমরা ওই মন্তব্যের সঙ্গে মোটেও সহমত পোষণ করি না। এটি একান্তই ওই নেতার ব্যক্তিগত মতামত।’’
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘এক জন ব্যক্তি সংসদের ভিতরে কী বলছেন, তার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা গোমাতাকে সম্মান করি। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’ সব শিবির থেকে হওয়া সমালোচনায় কিছুটা পিছু হটেছেন সেন্থিলকুমারও। তিনি বলেন, ‘‘আমি আগেও এ ধরনের মন্তব্য করেছি। কিন্তু এতে কারও মনে আঘাত লাগলে ভবিষ্যতে এ ধরনের মন্তব্য করব না।’’ যদিও তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, অতীতেও একাধিক বার সনাতন ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে দেখা গিয়েছে ডিএমকের এই নেতাকে।