ছবি: সংগৃহীত।
রিয়াং শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাস্তুচ্যুত বাঙালিরা এ বার ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন। তাঁদের বক্তব্য, সিপিএম জমানায় তাঁরা মুখ খুলতে সাহস পাননি। আশা ছিল, কখনও রিয়াংরা চলে গেলে নিজেদের বাস্তুতে ফিরবেন। কিন্তু এখন শুনছেন, রিয়াংদের এখানেই পুনর্বাসিত করা হবে। এই বাস্তুচ্যুত বাঙালি পরিবারগুলির তরফে অরুণ দাস বলেন, ‘‘গত ২২ বছর ধরে উদ্বাস্তুর জীবন কাটাতে হচ্ছে।’’ শেষ পর্যন্ত গত ২৮ নভেম্বর কাঞ্চনপুরের মহকুমা শাসকের কাছে সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছেন তাঁরা।
প্রায় ৫০০টি পরিবারের প্রায় তিন হাজার মানুষ নিজেদের হৃত জমি পুনরুদ্ধারের জন্য ‘উদ্বাস্তু উন্নয়ন কমিটি’ গড়েছেন। তার সভাপতি অরুণবাবু। তিনি বলেন, ‘‘১৯৫৫ সালে মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী আমাদের বাপ-ঠাকুরদাকে এই জমিতে পুনর্বাসন দেন। এখনও নথিপত্রে ওই সব জমি ‘স্বস্তি সমবায় সমিতির’ নামে রেকর্ড হয়ে রয়েছে।’’ অরুণবাবুর কথায়, ‘‘১৯৯৭ সালে মিজোরাম থেকে রিয়াং জনগোষ্ঠির শরণার্থীদের জায়গা দিতে আমাদের উৎখাত করা হয়।’’ উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার ছ’টি বাঙালি অধ্যুষিত গ্রামের সবাইকে উৎখাত হতে হয় বলে তাঁদের দাবি। তাঁর বক্তব্য, বামফ্রন্ট সরকার প্রায় ছ’বছর মতো সাহায্য দিয়েছিল। তারপর থেকে ওই পরিবারগুলি এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিনযাপন করছেন। মহকুমা শাসক অভেদানন্দ বৈদ্য জানিয়েছেন, কমিটির আবেদন পত্র জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁদেরকে নামের তালিকা দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
এ দিকে, রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরায় পুনবার্সনের বিষয়ে কথাবার্তা শুরু হতেই উৎফুল্ল রিয়াং শিবির। আজ শরণার্থীদের সব ক’টি সংগঠন এক যৌথ বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি প্রস্তাব নিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, ত্রিপুরা সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার শীঘ্রই ২২ বছর ধরে ত্রাণ শিবিরে থাকা বাস্তুচ্যুত রিয়াং বা ব্রু’দের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।’’