প্রতীকী ছবি
আঠাশ ঘণ্টার যাত্রায় গন্তব্যে পৌঁছতে লাগছে চার দিন। কোন দিনের ট্রেন, কবে কোথায় পৌঁছে যাচ্ছে তার হদিশ নেই কারও কাছে। দেখেশুনে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়লার কটাক্ষ, পটনা যাওয়ার ট্রেন যদি পুরুলিয়ায় গিয়ে থামে, দ্বারভাঙ্গার ট্রেন যদি রৌরকেল্লায় গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, তা হলে হিসেব রাখা যাবে কী করে! ফলে বাড়ছে স্টেশনে খাবার লুটের ঘটনা।
রেল বলছে, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের রুটগুলিতে ট্রেনের ভিড়। তাই ট্রেন ঘুরিয়ে দিচ্ছে তারা। বিরোধীদের অভিযোগ, সেটা করতে গিয়ে যাত্রীদের জন্য বাড়তি খাবার ও জলের যে প্রয়োজন রয়েছে, তার খেয়াল রাখেনি রেল। ফলে ট্রেন স্টেশনে থামলে ক্ষুধার্ত শ্রমিকেরা খাবার লুঠ করছেন। কাল ইটারসির পরে আজ প্রয়াগরাজ চৌকি স্টেশনে বিহারগামী শ্রমিক স্পেশাল দাঁড়ালে স্টলে থাকা জল, খাবার লুট হয়ে যায়।
শ্রমিক স্পেশাল চালানোর প্রশ্নে খামখেয়ালিপানা নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ওড়িশা ও মহারাষ্ট্র সরকারও। ওড়িশা সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, এত দিন কোন ট্রেনে কোথা থেকে শ্রমিক আসছিল, তা বোঝা যাচ্ছিল। সেই মতো তাদের জন্য পরীক্ষা, কোয়রান্টিন বা বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু গত ক’দিন ধরে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়ায় সেগুলি কোন পথ দিয়ে আসছে, তা জানা যাচ্ছে না।
ওড়িশা সরকারের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পি কে জেনা রেলকে অভিযোগে জানিয়েছেন, গত রবিবার ১২টি স্পেশাল ট্রেনে প্রায় কুড়ি হাজার শ্রমিকের তেলঙ্গানা থেকে আসার কথা ছিল। কিন্তু তারা কোথায়, সে সম্পর্কে রাজ্যের কোনও ধারণাই নেই।
কথা মতো ট্রেন না চালানোর অভিযোগে সরব মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও। তাঁর অভিযোগ, প্রতিদিন ৮০টি শ্রমিক স্পেশাল চেয়ে পেয়েছেন মাত্র ৪০টি। পাল্টা জবাবে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল টানা এক ডজনের বেশি টুইট করেন। জানান, সোমবার ১২৫টি ট্রেন মহারাষ্ট্র থেকে ছাড়ার কথা। কিন্তু সেগুলি কোথা থেকে ছাড়বে, যাত্রীদের মেডিক্যাল শংসাপত্র রয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনও তথ্য রাজ্য সরকার রেলকে দেয়নি। রেল ট্রেন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে ট্রেন যাতে খালি না যায়। শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের অভিযোগ, ট্রেন দেওয়া নিয়ে রাজনীতি করছেন গয়াল। রেল নিজের অক্ষমতা ঢাকতে রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। রেলের হিসেবে গত ২৫ দিনে ৩০৬০টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার সঙ্গে কথা মোদীর