চিন এবং ভারতের সেনাবাহিনী। —ফাইল চিত্র।
লাদাখের দেপসাং, ডেমচক এলাকা-সহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সেনা সরানোর ব্যাপারে দিন কয়েক আগেই ভারত এবং চিন ঐক্যমতে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, চলতি মাসের শেষের মধ্যেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র কাজ শেষ হবে। ফিরে যাবে ২০২০ সালের মে মাসের আগের অবস্থায়।
গত সপ্তাহেই লাদাখে সেনা অবস্থান নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায় পৌঁছেছে ভারত এবং চিন। চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থা কেটেছে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশই দেপসাং, ডেমচক এলাকা থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এই চার বছরে যে সব অস্থায়ী সেনা ছাউনি তৈরি হয়েছিল, তা-ও সরিয়ে ফেলা হবে। আগের মতোই দু’দেশের সেনাই টহল দেবে সীমান্তে। কিন্তু ‘টহলদারি সীমানা’ নিয়ে যাতে কোনও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি না হয়, নজর থাকবে সে দিকেও। সেনা সূত্রে খবর, টহলদারির বিষয়ে দু’দেশই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানবে। এক দেশের সেনা টহলদারি শেষ হলে তারা অন্য দেশকে তা জানিয়ে দেবে। তার পরই শুরু হবে ওই দেশের টহলদারি।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন।
গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, ডেপসাং উপত্যকা-সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা অমীমাংসিতই ছিল। অবশেষে সেই সমস্যার সমাধান হল। সূত্রের খবর, আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যেই ভারত এবং চিন— দু’দেশই সেনা সরানোর কাজ সম্পন্ন করে ফেলবে।