কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব ফেরালেন পিকে।
কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। মঙ্গলবার পিকে নিজেই টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন। টুইটারে প্রশান্ত লিখেছেন, ‘কংগ্রেসে যোগদান এবং ভোটের দায়িত্ব উদাত্ত আহ্বান আমি প্রত্যাখ্যান করলাম। আমার বিনীত মতামত, গঠনমূলক সংস্কারের মাধ্যমে অন্তর্নিহিত কাঠামোগত সমস্যার সমাধানের জন্য আমার চেয়েও বেশি দলের প্রয়োজন নেতৃত্ব এবং সম্মিলিত সদিচ্ছার।’
সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী পিকে-কে সরাসরি কংগ্রেসে যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। পিকে অবশ্য তখন কোনও পাকা কথা দেননি। তিনি বলেছিলেন, ভেবে দেখবেন। কারণ, পিকে-র ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি প্রথম থেকেই কংগ্রেসে যোগ দিতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন ‘পরামর্শদাতা’ হিসেবে কাজ করতে। কারণ, পিকে বরাবর চেয়েছেন সেই অনুঘটকের কাজ করতে,যারা বিরোধীদের একজোট করতে পারবে। তা ছাড়া, পিকে সবসময়েই ‘স্বাধীন’ ভাবে কাজ করতে আগ্রহী। তাঁকে কোনও দায়িত্বের মধ্যে আটকে দেওয়াটাও এই ভোটকুশলীর মনোমত নয়। সেই যুক্তিতেই তিনি কংগ্রেসের আহ্বানে সাড়া দিলেন না বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
এর মধ্যেই সোমবার টিআরএসের সঙ্গে পিকে-র চুক্তি হয়ে যায়। ফলে তাঁর পক্ষে কংগ্রেসকে বারণ করে দেওয়াটা আরও সোজা হয়ে যায় বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি। পাশাপাশিই, তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাংশ এমনও দাবি করছেন যে, পিকে বরাবর ‘কিংমেকার’ হতে চেয়েছেন। নিজে ‘রাজা’ হতে চাননি। পাশাপাশিই, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি থেকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনাও বেড়ে চলেছে। রিপন বরা এবং মুকুল সাংমার মতো নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মুকুলের দাবি, অদূর ভবিষ্যতে কংগ্রেসের আরও নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে পিকে কংগ্রেসে যোগ দিলে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ‘সমীকরণ’ নিয়েও জটিলতা তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। পিকে সেটিও এড়াতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি।
প্রশান্তের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটারে লেখেন, ‘প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে আলোচনা এবং তাঁর উপস্থাপনার পর কংগ্রেস সভানেত্রী একটি বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করেছেন। তাঁকে (পিকে) দলে আমন্ত্রণ জানানোর আবেদন জানানো হলেও তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা দলের জন্য তাঁর প্রচেষ্টা এবং পরামর্শকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ প্রসঙ্গত, গত দু’সপ্তাহে ধারাবাহিক বৈঠকে কংগ্রেসের পুনরুত্থানের জন্য পিকে-র তরফে একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, পি চিদম্বরম-সহ সাত কংগ্রেস নেতার কমিটি সেই পরামর্শগুলি খতিয়ে দেখে সভানেত্রী সনিয়ার কাছে একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে। তাতে পিকে-র অধিকাংশ প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সুপারিশ করা হয় বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ‘এমপাওয়ার্ড অ্যাকশন গ্রুপ, ২০২৪’ নামের একটি নতুন কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। দলের তরফে জানানো হয়, কমিটির এর কাজ হবে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা। কিন্তু প্রশান্ত কিশোর এই কমিটিতে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে কংগ্রেস কোনও উত্তর দিতে পারেনি।