লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেললাইন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের। ওই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না রেল কর্তৃপক্ষ। আবারও মাইগ্রেনডিসার ৯২ কিলোমিটার অংশে রেল লাইন তুলে ফেলা হয়েছে। চলছে ওই অংশে মাটি খোঁড়ার কাজ। কিন্তু কেন বারবার মাইগ্রেনডিসার ওই অংশেই মাটি ফুলে ফেঁপে উঠছে তার কোনও জবাব নেই রেলকর্তাদের কাছে।
মাইগ্রেনডিসায় প্রথমে যে জায়গায় লাইনের নীচের মাটি ফুলে ফেঁপে উঠেছিল, এবার সেই জায়গা থেকে কিছু দূরে, ঠিক ৮ নম্বর সুড়ঙ্গের মুখে মাটি ফুলে ফেঁপে উঠে লাইন এক ফুটের মতো উপরে উঠে বেঁকে গিয়েছে। ক্রমশ লাইন অল্প অল্প করে উপরে উঠছে। রেল কর্তারা ভয় পাচ্ছেন যদি ৮ নম্বর সুড়ঙ্গের ভিতরের মাটি ফেঁপে ওঠে তা হলে বিপদ আরো বাড়বে। এতে সুড়ঙ্গের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভেঙ্গেও পড়তে পারে সুড়ঙ্গ। কিন্তু কেন এ রকম হচ্ছে, তার জবাব নেই উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে।
রেলের নির্মাণ শাখা অস্ট্রিয়া থেকে বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ডঃ ক্রেনকে মাইগ্রেনডিসায় নিয়ে এলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ডঃ ক্রেন মাইগ্রেনডিসায় এসে মাটির গুণমান দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। তিনি রেলকর্তাদের পাশের পাহাড় কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। সেই মতো পাহাড় কাটতে শুরু করে রেলের নির্মাণ শাখা। কিন্তু তারপরও দেখা দেয় একই সমস্যা। এখন ওই সমস্যা মোকাবিলার জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে রেলকর্মীদের।
এখন পূজার্চনাই একমাত্র ভরসা তাদের কাছে। রেলের নির্মাণ শাখাই মাইগ্রেনডিসার ওই অংশে পূজার্চনার ব্যবস্থা করেছে। লামডিং-শিলচর রেললাইনের মাইগ্রেনডিসা থেকে ডিটেকছরা পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার ‘ডাইভারশন’ অংশ সব সময় বিপজ্জনক। কারণ ওই অংশের মাটি অত্যন্ত দুর্বল। লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেললাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর তৎকালীন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি সুদর্শন নায়েক ওই অংশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন তাঁর রিপোর্টে।
আজ এনিয়ে সুদর্শন নায়েকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি ওই রেলপথ পরিদর্শন করে যা রিপোর্ট দিয়েছি তা রেলের কাছেই রয়েছে। তারপর রেল যা ভালো বুঝেছে তাই করেছে। এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।’’ গত এক মাস ধরে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত ৬ জুন ওই রেলপথে পরীক্ষামূলক ভাবে মালগাড়ী চলাচল শুরু হলেও রবিবার রাত থেকে আবার মালগাড়ী চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ মাইগ্রেনডিসার ওই ‘৯২ কিলোমিটার’ অংশে পরিস্থিতি জটিল।
আজ মাইগ্রেনডিসার ওই অংশে লাইন তুলে মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। তারপর সেখানে মাটি পাথর ফেলে নতুন করে লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।