প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অগ্নিবীর প্রকল্প ঘিরে এ বার মতান্তর দেখা দিল প্রাক্তন সেনানীদের মধ্যে। প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল কে বি সিংহ যখন দাবি করছেন অগ্নিবীর প্রকল্পের ফলে দেশের যুদ্ধ প্রস্তুতির অবনতি হবে, তখন পাল্টা সেনাবাহিনী নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধ করেছেন বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া। তাঁর পাল্টা দাবি, ওই যোজনায় যাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরা আর পাঁচ জন জওয়ানের মতোই সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। সামরিক প্রস্তুতির প্রশ্নে কোনও ফাঁক থাকে না। সব মিলিয়ে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজার পরে অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে সেনাপ্রধানদের মতান্তর চলতি বির্তককে বাড়তি মাত্রা দিল।
অগ্নিবীর প্রকল্পের মাধ্যমে সেনায় ভর্তি হওয়া লুধিয়ানার যুবক অজয় সিংহের মৃত্যুর পরে ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে বিতর্ক ওঠে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, ওই জওয়ান অগ্নিবীর প্রকল্পে সেনায় ভর্তি হয়েছিলেন বলে আর পাঁচ জন সেনার মতো ক্ষতিপূরণ পাননি। পেনশন থেকেও বঞ্চিত অগ্নিবীরেরা। যদিও রাহুলের অভিযোগ মানতে চাননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, সেনা থেকে জওয়ান অজয় সিংহের পরিবারকে এক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজনাথের সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছেন খোদ মৃত জওয়ানের পিতা চরণজিৎ সিংহ। চরণের কথামতো তিনি মোট ৯৮ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। যার মধ্যে সেনাবাহিনীর বিমা খাত থেকে পেয়েছেন ৪৮ লক্ষ টাকা। বাকি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বিমার অর্থ হিসেবে দিয়েছে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক। কিন্তু সেনা আলাদা করে এক কোটি টাকা দিয়েছে বলে রাজনাথ যে দাবি করেছেন তা ভ্রান্ত। পরে সেনার তরফেও জানানো হয়, সেনার অর্থ পাওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। সব দিক খতিয়ে ওই অর্থ প্রয়াত সেনার ‘নমিনি’কে দেওয়া হয়। খুব দ্রুত ওই টাকার মঞ্জুরি দেওয়া হবে।
অগ্নিবীর নিয়ে এই বিতর্কের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি ভবনে আজ সেনাবাহিনীর উদ্দেশে সম্মান প্রদর্শন অনুষ্ঠান হয়। যাতে অংশ নেন মৃত সেনার পরিবারের অনেকে। বিরোধী দলনেতা হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী। অগ্নিবীর অজয় সিংহ প্রসঙ্গে রাহুল আজ টুইট করে বলেন, ‘‘শহিদ অজয়ের পরিবার আজ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনও ক্ষতিপূরণ পায়নি। সরকারকে বুঝতে হবে ক্ষতিপূরণ আর বিমার অর্থ পাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অজয়ের পরিবার কেবল বিমার অর্থ পেয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যে সাহায্য পাওয়ার কথা ছিল তা পায়নি অজয়ের পরিবার।’’