মৈত্রী এক্সপ্রেস। — ফাইল চিত্র।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। সেই আন্দোলনের জেরে স্তব্ধ সে দেশের জনজীবন। স্কুল, কলেজ বন্ধ। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। ঘুরছে সেনা ট্যাঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে রবিবারও বাতিল করা হল কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস। শুধু তা-ই নয়, রাজধানী ঢাকা থেকে কোনও ট্রেন চলাচল করছে না বৃহস্পতিবার থেকে। কবে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ঢাকায় কোনও ট্রেন প্রবেশ করবে না। এমনকি, ঢাকা থেকে কোনও ট্রেন কোথাও যাবেও না।
রবিবার ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ২১ জুলাই ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল, সেটা বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২২ জুলাই কলকাতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়া মৈত্রী এক্সপ্রেসও বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল। গত শুক্রবার থেকেই বন্ধ মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাতায়াত। রবিবার কলকাতা-খুলনা এবং খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেসও বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে শতাধিক মৃত্যু ঘটেছে। এএফপির তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা অন্তত ১১৫। আহত আরও অনেকে। বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। শুক্রবার রাতে জারি করা হয় কার্ফু। হাসিনা সরকার বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নীতিগত ভাবে সহমত। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেও চেয়েছিলেন দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিন্তু আন্দোলনকারীরা দাবিতে অনড় ছিলেন। আন্দোলন থামাতে একের পর এক পদক্ষেপ করছে হাসিনার সরকার। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, শনিবার সারা বাংলাদেশে ‘শুট অন সাইট’ জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। অর্থাৎ, দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
প্রসঙ্গত, রবিবার কোটা সংস্কার মামলার শুনানি রয়েছে সে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ নিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। সেই আপিলের শুনানি রবিবার হবে।