প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
এত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পিছনে মোটেই ভোট-রাজনীতির স্বার্থ নেই। মানুষের সার্বিক বিকাশের স্বার্থেই ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে বিজেপি। শনিবার অরুণাচলের হলঙ্গিতে রাজ্যের প্রথম গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দর ও ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কামেং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধনী ভাষণে এমনটাই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সমালোচকদের এক হাত নিয়ে বলেন, পুরো বিষয় না জেনেই যে কোনও বিষয় নিয়ে সরকারের সমালোচনা করার পুরনো মানসিকতা এ বার বদলানোর সময় এসেছে। ডনি পোলো বিমানবন্দরের উদ্বোধনের পরে মোদী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে নাগাড়ে অবহেলিত উত্তর-পূর্বের দিনবদল শুরু হয়েছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে। ২০১৪ সাল থেকে উন্নতির নতুন জোয়ার শুরু হয়েছে এখানে। উত্তর-পূর্বের সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব ঘুচেছে। দেশের দীর্ঘতম রেল-সড়ক সেতু, বড় জাতীয় সড়ক, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ার ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বে এখন সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়।’’
তিনি বাঁশ সংক্রান্ত আইন সংশোধনীর কথা উল্লেখ করেন। জানান, অরুণাচলের সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নে কেন্দ্র ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের প্রত্যন্ত শেষ গ্রামকে এখন দেশের প্রথম গ্রামের মর্যাদা দেওয়া হয়। ভাইব্র্যান্ট বর্ডার ভিলেজ প্রকল্পের অধীনে সীমান্তগ্রামের তরুণদের এনসিসিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, যেখান থেকে পরে তাঁরা সেনায় যোগ দিতে পারবেন।’’
৬৯০ একর জমিতে ৬৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ডনি পোলোর ২৩০০ মিটারের রানওয়েতে সব আবহাওয়ায়, দিনভর বিমান ওঠানামা করা সম্ভব। এমনকি প্রয়োজনে রাতেও এখানে সামরিক বিমান ওঠানামা করতে পারবে। এ নিয়ে রাজ্যে সক্রিয় বিমানবন্দরের সংখ্যা দাঁড়াল চারটি। উত্তর-পূর্বে বিমানবন্দরের সংখ্যা বেড়ে হল ১৬। তার মধ্যে সাতটি বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে গত আট বছরে।
২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। সেই কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অতিমারি ও বিভিন্ন প্রতিকূলতা সামলেও এত দ্রুত কাজ শেষ করার অভূতপূর্ব উদাহরণ অরুণাচল দেখাল। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে যুগের পর যুগ ফেলে রাখা নয়, নিজে প্রকল্পের শিলান্যাস করে, নিজেই সেই প্রকল্প উদ্বোধন করার নতুন কর্মসংস্কৃতি আনতে চাই আমি। যাঁরা বলেছিলেন বিমানবন্দরের শিলান্যাস শুধুই নির্বাচনী চমক, এ দিনের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তাঁদের মুখের মতো জবাব। অরুণাচলে এখন কোনও ভোট নেই। কিন্তু সরকার নির্বাচন নয়, শুধুই জনকল্যাণের স্বার্থে বদ্ধপরিকর।’’
বিমানবন্দরের নামের অর্থ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন ডনি মানে সূর্য, পোলো মানে চাঁদ। দিবারাত্র রাজ্যকে উন্নয়নের আলোয় আলোকিত করে রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য।
পাশাপাশি কামেং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৮৪৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৮০ কিলোমিটার। এই প্রকল্পের ফলে অরুণাচলে এখন বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকবে।