গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
কেউ পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কেউ বা বলেছেন, আজ উৎসবের দিন। কারও মতে, শান্তি পাবে নির্যাতিতার আত্মা। তেলঙ্গানা এনকাউন্টার-কাণ্ডে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পূর্ণ উল্টো সুর শোনা গেল তাঁরই দলের সাংসদের একাংশের গলায়। মমতা বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখার কথা বললেও এ নিয়ে পুরোপুরি ভিন্ন মত দেব-নুসরত-মিমির।
শুক্রবার ভোররাতে তেলঙ্গানায় পুলিশি এনকাউন্টারে নিহত হন গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত চারজন। ঘটনার পরই প্রশংসার পাশাপাশি নিন্দা-সমালোচনার নানা মত দিতে থাকেন অনেকে। এ নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ দিন দুপুরে মেয়ো রোডে একটি সভায় আইনের শাসন তথা বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেন মমতা। তবে ওই সভায় মমতার মন্তব্যের আগে এবং পরেও দেখা যায়, এ বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে সহমত নন তাঁরই দলীয় সাংসদের একাংশ।
আরও পড়ুন: অনেকেই বলছেন সাবাশ, কেউ বলছেন অন্যায়, তেলঙ্গানা এনকাউন্টার নিয়ে তোলপাড় দেশ
আরও পড়ুন: আইন হাতে তোলা যায় না, তেলঙ্গানার বিতর্কিত এনকাউন্টার নিয়ে মুখ খুললেন মমতা
তেলঙ্গানা এনকাউন্টার প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াটা আইন নয়। আইন এটাই যে পুলিশ তার কাজ করবে। অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করবে। বিচারক তাঁর কাজ করবেন।’’ ওই মন্তব্যের পাশাপাশি তেলঙ্গানা গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ১০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশের দাবিও তোলেন তিনি।
মমতার সভার আগে অবশ্য ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ দেবের গলায় একেবারে অন্য সুর শোনা গিয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ টুইটারে হায়দরাবাদ পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘এর প্রয়োজন ছিল।’ এর কিছু ক্ষণ পরেই দেখা যায় নুসরত জাহানের টুইট। তাতেও দেবের মতের সঙ্গে বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে নিজেকে মানবতাবাদী বলে আখ্যা দিলেও সুবিচারের জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেন নুসরত। বসিরহাট কেন্দ্রে সাংসদের টুইট, ‘অবশেষে... সুবিচারের জন্য বিচার / আইন ব্যবস্থার কারুর ব্যাটন তুলে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আর্তি শোনা হয়েছে... অপরাধীদের আর অস্তিত্ব নেই।’
দেব বা নুসরতের মন্তব্য শোনা গিয়েছিল মমতার সভার আগে। তবে এনকাউন্টার নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্যের পরেও মমতার সঙ্গে সহমত হতে দেখা যায়নি যাদবপুর কেন্দ্রের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে। তেলঙ্গানা পুলিশকে বাহবা দিয়ে নির্যাতিতার উদ্দেশে মিমির টুইট, ‘এ বার তোমার আত্মা শান্তি পাবে।’ তবে এই মত প্রকাশের আগে মমতার বক্তব্য তাঁর শোনা হয়েছিল কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
এখানেই থেমে থাকেননি মিমি। এর পর সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি ভিডিয়ো রি-টুইট করেছেন তিনি। তাতে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশকর্মীদের ঘিরে জনতার উল্লাস।