তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব যে দিন খারিজ হল, সে দিনই জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ আনলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাঁর অভিযোগ, ধনখড় সংসদের আলোচনার একটি বড় সময় ধরে নিজেই কথা বলে গিয়েছেন। সংসদে অথবা রাজ্যসভায় এটা নতুন কোনও ‘রেকর্ড’ তৈরি হল কি না, এই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের এই সাংসদ।
আজ ডেরেক বলেন, “১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভা চলেছে মোট ৪৩ ঘণ্টা। এর মধ্যে ১০ ঘণ্টা বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাড়ে সতেরো ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে সংবিধান নিয়ে। বাকি থাকছে সাড়ে পনেরো ঘণ্টা। এই সময়ের ৩০ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে চার ঘণ্টা কে নিজেই কথা বলে গিয়েছেন? রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি!” তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, “সংসদে জগদীপ ধনখড় কি নতুন রেকর্ড গড়লেন?”
পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করেছেন ডেরেক। আবার কংগ্রেসকেও খোঁচা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “বিজেপির অনেক সাংসদই এক ঘণ্টার উপরে বলার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, কিরেন রিজিজু, নির্মলা সীতারামন। বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র মল্লিকার্জুন খড়্গেই এক ঘণ্টার বেশি বলার সুযোগ পান।” ডেরেকের কথায়, “কয়েকটি ‘বিশেষ্য পদ’ এ বার সংসদের শিরোনামে এসেছে। জর্জ সোরস, গৌতম আদানি, জওহরলাল নেহরু। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, বেকারত্বের মতো বিষয়গুলিই সংসদে প্রাধান্য পাবে বলে আশা
করা হয়েছিল।”
সংসদ অচল নিয়ে প্রথম থেকেই কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে তৃণমূল।রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে ডাকা ‘ইন্ডিয়া’-র সংসদীয় কক্ষ সমন্বয়ের বৈঠকে এক দিনও যায়নি তারা। বরং ‘জিঞ্জার গোষ্ঠী’ তথা এসপি, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, শরদ পওয়ারের এনসিপি, আপের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। মঞ্চের নতুন মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সামনে এনেছে।
আজও সংসদের বাইরে কংগ্রেস যখন ধর্না দিচ্ছিল, তাতে যোগ দেয়নি তৃণমূল। বরং আলাদা করে অম্বেডকরের মূর্তির সামনে গিয়ে, দু’দফায় ‘জয় ভীম’ বলে এবং শাহের অপসারণ চেয়ে স্লোগান দেন তাঁরা। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আমাদের সঙ্গে অন্য আঞ্চলিক দলগুলির কথা হচ্ছে। প্রত্যেকেই সহমত, কংগ্রেসকে ইন্ডিয়া জোটে একা ছড়ি ঘোরাতে দেওয়া হবে না।” রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নাদিমুল হক বলেন, “আমরা অম্বেডকরের সঙ্গে আছি। কিন্তু নিজেদের মতো করে প্রতিবাদের রাস্তা তৈরি করতে চাই।”