Crime Against Women

যৌন হরমোনের ক্ষরণ বন্ধ করানো হোক ধর্ষণের সাজা! আর্জি শুনে কেন্দ্রের মত চাইল সুপ্রিম কোর্ট

ধর্ষণ এবং অন্য গুরুতর যৌন নির্যাতনের মামলায় কড়া আইন চালু করার প্রস্তাব জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মোট ১০ দফা দাবি নিয়ে মামলা করেছে সুপ্রিম কোর্টের মহিলা আইনজীবী সংগঠন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৯
Share:

ধর্ষণ এবং গুরুতর যৌন অপরাধের ঘটনা রুখতে সংস্কারের আর্জিতে মামলা সুপ্রিম কোর্টে। —ফাইল চিত্র।


Advertisement

ধর্ষণ মামলার আসামি যাতে একই অপরাধ পুনরায় না করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে কড়া আইনের আর্জি নিয়ে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই ধরনের গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিশেষ চিকিৎসার মাধ্যমে আসামির যৌন হরমোনের ক্ষরণ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে মামলায়। ধর্ষণ মামলায় এটিকে একটি সাজা হিসেবে বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মহিলাদের উপর এ ধরনের অত্যাচারের মামলায় কোনও জামিন না-দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, ওই মামলায় কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি করেছে শীর্ষ আদালতের মহিলা আইনজীবীদের সংগঠন। মামলাকারী এ বিষয়ে আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছে বলে জানিয়েছে ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’। এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলিতেও ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ মামলাকারীর। মহিলা, শিশু এবং রূপান্তরকামীদের উপর অপরাধ রুখতে ১০ দফা পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে মামলাকারী পক্ষ। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ সোমবার ওই মামলায় নোটিস জারি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের মৌখিক পর্যবেক্ষণ, “শাস্তিমূলক আইনের কোথায় ঘাটতি রয়েছে, তা আমাদের দেখতে হবে।”

Advertisement

যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে মামলাকারী সংগঠন। আইন সংক্রান্ত বিষয়ে দশ দফা সংস্কারের দাবি সুপ্রিম কোর্টের নজরে এনেছে ওই সংগঠন। মামলাকারী আইনজীবী সংগঠনের দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে— যৌন নির্যাতনে কারা দোষী সাব্যস্ত হচ্ছেন এ বিষয়ে জাতীয় স্তরে তালিকা তৈরি করতে হবে। যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁদের চিকিৎসা করে যৌন হরমোন ক্ষরণ বন্ধ করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত পর্নোগ্রাফির উপর রাশ টানতে হবে। স্কুলে স্কুলে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। গুরুতর যৌন নির্যাতনের মামলায় ছ’মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কেউ জামিন পাবেন না, এমন নিয়ম চালু করতে হবে।

এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং সাধারণের ব্যবহারের জায়গাগুলিতে মহিলাদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচালয়ের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে ওই সংগঠন। এই ধরনের সংবেদনশীল মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের আচরণ যাতে ঠিকঠাক থাকে, সে বিষয়টি নিয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি ট্যাক্সি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা যাতে যাত্রীদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করেন, সে বিষয়ে একটি হ্যান্ডবুক চালু করা এবং কর্মক্ষেত্রে সিসিটিভি বসানোরও দাবিও জানিয়েছে মামলাকারী সংগঠন।

চিকিৎসার মাধ্যমে আসামির যৌন হরমোনের ক্ষরণ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ভিন্‌ দেশের উদাহরণও টেনেছে মহিলা আইনজীবীদের সংগঠন। তাদের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু করার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলিতে মহিলাদের উপর এই ধরনের যৌন নির্যাতন কমেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement