ডিসিপিকে পাশে নিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিতে দেখা যায় কপিল মিশ্রকে। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য কোনও এফআইআর দায়ের করল না দিল্লি পুলিশ। আদালতে তারা জানিয়ে দিল, দিল্লির যা পরিস্থিতি, তাতে এখনই এফআইআর দায়ের করলে, তা শান্তি এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পক্ষে সহায়ক হবে না। গতকাল দিল্লি হাইকোর্ট পুলিশকে একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন দিল্লি পুলিশ এ কথা জানায়।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার আর্জি মেনে এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি পক্ষ হিসাবে মামলার অন্তর্ভুক্ত করে বিচারপতি ডিএন পটেল এবং সি হরিশঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে সময় দিয়েছে আদালত। তার মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে তা-ও জানাতে হবে সরকারকে।
বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া, এবং তার পরে উত্তর-পূর্ব দিল্লি জুড়ে রবিবার রাত থেকে হিংসা, গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময় নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে দিল্লি পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠছে। সেই সংক্রান্ত একটি আবেদনের শুনানিতে বুধবার দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি এস মুরলীধর। বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মা ও অজয় বর্মার বিরুদ্ধে কেন এফআইআর দায়ের হয়নি, দিল্লি পুলিশের কাছে তা জানতে চান তিনি। একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেন। এফআইআর না-হলে তার ফল কী হতে পারে, তা-ও পুলিশকে ভেবে দেখতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারকে ‘রাজধর্ম’ পালন করতে বলুন, দিল্লি নিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবারে সনিয়া
আরও পড়ুন: লাগামছাড়া হিংসার নিশানায় মুসলিমরাই, দাবি মার্কিন কমিশনের, অভিযোগ খারিজ দিল্লির
কিন্তু বুধবার রাতেই বিচারপতি মুরলীধরকে বদলি করা হয়। এ দিন মামলার শুনানি করার ভার পড়ে বিচারপতি ডিএন পটেলের উপর। সেখানে দুপুরে শুনানি শুরু হলে দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দেয়, উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য এখনই কোনও এফআইআর দায়ের করতে চায় না তারা। এ দিন আদালতে পুলিশ জানায়, হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪৮টি এফআইআর দায়ের করেছে তারা। কিন্তু এখনই উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য কোনও এফআইআর দায়ের করা ঠিক হবে না। কারণ এই মুহূর্তে তা শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় খুব সহায়ক হবে না।
বহিরাগতরা ঢুকেই দিল্লিতে হিংসা ছড়াচ্ছে বলে এর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল। তবে এ দিন আদালতে পুলিশ জানায়, এখনও পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১০৬ জনই স্থানীয় বাসিন্দা। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা গিয়েছে। তাতে কী পাওয়া যায়, তার উপর ভিত্তি করে আরও গ্রেফতারি হবে। সিসিটিভি ফুটেজে এলাকায় কিছু বহিরাগতকেও ঢুকতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
গতকাল মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত কক্ষে কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিয়ো চালান মুরলীধর। এ দিন ফের আদালতে তা নিয়ে আপত্তি জানান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, ‘‘বেছে বেছে ভিডিয়ো জমা দিয়েছেন আবেদনকারী। কিন্তু কোন ভিডিয়ো দেখানো হবে আর কোনটা নয়, তা উনি বেছে দিতে পারেন না। অন্য শিবির থেকেও নানা ভিডিয়ো সামনে এসেছে। তাই কোনওরকম পক্ষপাতিত্ব না হওয়ায়ই উচিত।’’