Delhi Violence

বদলির সিদ্ধান্ত ‘শাস্তি’ই, মত আইনজীবী মহলে

গত কাল নির্দিষ্ট সময়ে হাইকোর্টে হাজির হয়ে বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশকে ভর্ৎসনাও করেন বিচারপতি এস মুরলীধর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০২
Share:

বিচারপতি এস মুরলীধর। —ফাইল চিত্র

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধরকে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির সিদ্ধান্তকে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ হিসেবেই দেখছেন সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট দুশ্যন্ত দাভে।

Advertisement

শাহিন বাগে মধ্যস্থতার জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়েকে দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই হেগড়ের মত, ‘‘সলিসিটর জেনারেলের তরফে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ সত্ত্বেও দিল্লির হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি, তার পরেই বিচারপতি মুরলীধরকে বদলির নির্দেশ সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে।’’ দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কৈলাস গম্ভীরের মন্তব্য, ‘‘সরকার চায়, সবাই সরকারের সুরে সুর মেলাক। কিন্তু সবাই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্র নন।’’ বিচারপতি মুরলীধর আজ শেষ বারের মতো দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চে হাজির হন, একটি রায় দেওয়ার জন্য। বলেন, ‘‘এটাই আমার এই আদালতে শেষ বিচার বিভাগীয় কাজ।’’ এক তরুণ আইনজীবী বলেন, ‘‘আপনি আইনজীবীদের অনুপ্রেরণা।’’ মুচকি হাসেন বিচারপতি মুরলীধর।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে পৌনে দু’টো পর্যন্ত শুনানির শেষে বিচারপতি মুরলীধর দিল্লির হিংসাকবলিত এলাকার মানুষকে সাহায্য করতে পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। গত কাল নির্দিষ্ট সময়ে হাইকোর্টে হাজির হয়ে বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশকে ভর্ৎসনাও করেন। এর পর গভীর রাতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক বদলির নির্দেশ জারি করে। জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংবিধানের ২২২ অনুচ্ছেদের ১ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা রয়েছে। আইন মন্ত্রকের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশের ভিত্তিতে বিচারপতি মুরলীধরকে বদলির নির্দেশ জারি হয়। সঙ্গে অন্য যে দুই বিচারপতির বদলির সুপারিশ করা হয়েছিল, তাঁদেরও বদলির নির্দেশ জারি হয়েছে। কিন্তু আইনজীবী কামিনী জয়সওয়ালের যুক্তি, ‘‘সরকার কলেজিয়ামের সুপারিশের আড়ালে লুকোতে পারে না।’’ আইনজীবীরা মনে করাচ্ছেন, কলেজিয়াম সাড়ে তিন বছর আগে বিচারপতি পি কৃষ্ণ ভাটকে কর্নাটক হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করলেও কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়নি।

Advertisement

বদলি না-হলে ভবিষ্যতে দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদের দাবিদার হয়ে উঠতেন বিচারপতি মুরলীধর। সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ সূত্রের দাবি, বিচারপতি মুরলীধরের সম্মতি নিয়েই বদলির সুপারিশ করা হয়। হেগড়ে বলেন, ‘‘ওঁকে আগেও বদলির চেষ্টা হয়েছে। সে সময় প্রবীণ বিচারপতিরা বাধা দিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে, ১২ ফেব্রুয়ারি সুপারিশের আগে কলেজিয়াম ওঁর সম্মতি আদায় করে নেয়।’’ দাভে বলেন, ‘‘এই বদলি নিয়মমাফিক, কিন্তু যে ভাবে তাড়াহুড়ো করা হল, তাতে শাস্তির কথাই মনে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement