Delhi Pollution

হিতে বিপরীত! বৃষ্টিতে আরও ভয়াবহ দিল্লির দূষণ, কাল থেকে ফের জোড়-বিজোড় নীতি

একিউআই ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনুকুল বলে ধরা হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৬
Share:

দিল্লিতে দূষণের প্রকোপ কাটল না। ছবি: এএফপি।

বৃষ্টি হলে দূষণের মাত্রা কমে যাবে অনেকটাই, গত কয়েক দিন ধরে এমনই আশ্বাস মিলেছিল আবহাওয়া দফতরের কাছ থেকে। কিন্তু শনিবার বিকালে এক পশলা বৃষ্টির পরও রাজধানী দিল্লির পরিস্থিতি বদলায়নি এতটুকু। বরং আরও গাঢ় হয়েছে ধোঁয়াশা। দমবন্ধ করা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সর্বত্র। বাওয়ানা, জাহাঙ্গিরপুর, রোহিণী, সোনিয়া বিহার, শাহদরা, ওখলা, মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম, আনন্দ বিহার, পাঞ্জাবি বাগ, পুসা, মন্দির মার্গ, মুন্ডকা, শ্রীনিবাসপুরি এবং জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি এলাকায় বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ৯৯৯ ছাড়িয়েছে। একিউআই ৯০০ ছাড়িয়েছে আরও বেশ কিছু এলাকায়।

Advertisement

একিউআই ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনুকূল বলে ধরা হয়। আবার ৬০০ ছাড়ালে পরিস্থিতি ‘অতি বিপজ্জনক’ হয়ে দাঁড়ায়। দু’দিন আগেই রাজধানীর একিউআই ৬০০ ছুঁয়েছিল। সেই তুলনায় এ দিন সকালে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছিল। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ দিল্লির একিউআই ছিল ৪৪৭। কিন্তু বেলা বাড়তেই ফের আঁধার ঘনিয়ে আসে। সকাল ১০টায় একিউআই পৌঁছে যায় ৬২৫-এ। তার পরই একাধিক জায়গায় একিউআই ৯০০ ছাড়িয়ে যায়। এর আগে দিল্লিতে এমন ‘জরুরি’ পরিস্থিতি দেখা যায়নি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

কিন্তু বৃষ্টির পর যেখানে দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে উল্টোটা হল কেন? এ নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্ত বিশেষজ্ঞরাও। তবে তাঁদেরই একাংশ জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির পরিবর্তে হালকা বৃষ্টি হওয়াতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর ফলে বাতাসে স্যাঁতসেতে ভাব তৈরি হয়েছে। তার জেরে বাতাসের ভাসমান ধূলিকণাগুলি আরও ঘনীভূত হয়ে গিয়েছে। তাতেই ঘোলাটে ভাব বেড়েছে। কমে গিয়েছে দৃশ্যমানতাও।

Advertisement

দূষণের চাদরে ঢেকে গিয়েছে রাজধানী। ছবি: এএফপি।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির পরেও ধোঁয়াশা কাটল না দিল্লিতে, বাতাস এখনও ‘মারাত্মক’ই​

এমন পরিস্থিতিতে এ দিন ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একাধিক উড়ান ঘুরপথে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে‌ তাই ফের আগামী কাল থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে জোড়-বিজোড় নীতি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার। শুক্রবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পর ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরও কয়েক দিন স্কুল বন্ধ রাখা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হন কেজরীবাল। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘উত্তর ভারতে দূষণ অসহ্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। দিল্লি সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। বিনা অপরাধে অনেক মাসুল দিয়েছেন দিল্লিবাসী। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সাধারণ মানুষকে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই দিতে অবিলম্বে এ নিয়ে পদক্ষেপ করা উচিত কেন্দ্রের। এ ব্যাপারে আমরা তাদের সর্বতো ভাবে সাহায্য করব।’’

কেজরীবালের টুইট।

আরও পড়ুন: দূষণে মুখ ঢেকেছে দিল্লি, সবুজায়নে আট হাজার কোটি লগ্লির প্রতিশ্রুতি আঙ্গেলার​

দিল্লির দূষণের জন্য শুরু থেকেই পড়শি দুই রাজ্য, পঞ্জাব এবং হরিয়ানাকে দায়ী করে এসেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সরকারি মদতে লাগাতার ফসলের গোড়া পোড়ানোতেই রাজধানী ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। গতকাল আবার কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরকে তীব্র আক্রমণ করেন তাঁর ডেপুটি মণীশ সিসৌদিয়া। তিনি জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে পরিবেশ নিয়ে আলোচনায় বসার কথা ছিল রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রীদের। কিন্তু নানা বাহানায় প্রতিবারই সেই বৈঠক স্থগিত রেখেছেন জাভরেকর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement