তাহির হুসেন। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাকর্মী খুনে অভিযুক্ত আপ কাউন্সিলর তাহির হুসেনকে নিয়ে দিল্লি পুলিশের মতপার্থক্য আজ প্রকাশ্যে এসে পড়ল।
দিল্লির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অজিত শিংলা আজ জানান, গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে হিংসা কবলিত এলাকা থেকে তাহিরকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে পুলিশ শিংলার বক্তব্য খারিজ করে দেয়।
তারা জানায়, ওই দিন তাহির নিজের বাড়িতে সুরক্ষিতই ছিলেন। সে রাতে তাঁকে উদ্ধারের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কেন এই বয়ান বদল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। তাহিরকে নিয়ে দিল্লি পুলিশ সক্রিয় হলেও, উস্কানিমূলক বক্তৃতার অভিযোগে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরে কার্যত ব্যর্থ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ।
উত্তর-পূর্ব দিল্লির জ়াফরাবাদে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলাকালীন প্রকাশ্যে পিস্তল তাক করতে দেখা গিয়েছিল শাহরুখ নামে এক যুবককে। আজ সেই যুবককে গ্রেফতারের পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। সেখানে তাহির সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে অজিত বলেন, ‘‘সোমবার মাঝরাতে খবর আসে কারওয়াল নগরের কাছে নিজের বাড়িতে আটকে রয়েছেন আপ কাউন্সিলর তাহির হুসেন।
তিনি আতঙ্কিত শুনে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।’’
কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লি পুলিশ অজিতের বক্তব্য খণ্ডন করে। পুলিশের তরফে জানানো হয়, তাহির আদৌ আতঙ্কিত ছিলেন না। তাই তাকে উদ্ধারের প্রশ্নই ওঠে না। কাউন্সিলরের আটকে থাকার যে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। দেখা গিয়েছে ওই তথ্য সঠিক নয়। ওই কাউন্সিলর নিজের বাড়িতে সুরক্ষিত ছিলেন।
এক জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারের বক্তব্য কেন এ ভাবে খণ্ডন করা হল, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি পুলিশের কাছ থেকে। বিরোধীরা বলছেন, তাহিরের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাকর্মী অঙ্কিত শর্মাকে খুন এবং হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আতঙ্কিত ছিলেন— এ কথা মেনে নেওয়ার অর্থ আপ কাউন্সিলর আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা হওয়া। ফলে শিংলার বয়ান দ্রুত পাল্টানো হয়। গত মঙ্গলবারের পর থেকে নিখোঁজ তাহির। আজ পুলিশের দাবি, আপ কাউন্সিলরকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
তাহিরকে নিয়ে অতিসক্রিয় হলেও, বিজেপি নেতা কপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে ব্যর্থ দিল্লি পুলিশ। আজ খবর ছড়িয়ে পড়ে, হামলার আশঙ্কায় কপিল শর্মাকে ওয়াই প্লাস সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। যদিও দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার লোক কুমার বলেন, ‘‘ওই বিজেপি নেতাকে কোনও বিশেষ
নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি।’’ সিআরপিএফ-ও জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি কপিলকে।