ফাইল চিত্র
লকডাউনের মধ্যেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতারের ধারা অব্যাহত। শাহিনবাগের আন্দোলনকারী থেকে জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়া হয়ে এ বার নিশানায় জেএনইউ। সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে জড়িত জেএনইউ-এর দুই পড়ুয়াকে শনিবার গ্রেফতার করেছে অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ।
শনিবার টানা তিন ঘণ্টা জেরার পরে দেবাঙ্গনা কলিতা এবং নাতাশা নারওয়াল নামে দুই ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। দু’জনেই জেএনইউয়ের পড়ুয়া এবং দিল্লিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-হস্টেলে ছাত্রীদের বিভিন্ন অধিকারের দাবিতে সরব ‘পিঁজরা তোড়’ আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য।
ফেব্রুয়ারিতে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের গায়ে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন অনেকে। যার পাল্টা হিসেবে সিএএ-র পক্ষে মিছিল বার করেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। পুলিশের সামনেই তিনি হুমকি দেন, তিন দিনের মধ্যে ওই জায়গায় প্রতিবাদ-অবস্থান বন্ধ না-হলে তাঁরা নিজেরাই তা তুলে দেবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা হুমকি এবং উস্কানি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরেই গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায়। মৃত্যু হয় পঞ্চাশ জনেরও বেশি লোকের। ওই সংঘর্ষে দাঙ্গায় পুলিশি ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। এর মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে একাধিক সংখ্যালঘু যুবককে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে অমিত শাহের পুলিশ। জেএনইউয়ের প্রতিবাদী পড়ুয়াদের অভিযোগ, একের পর এক প্ররোচনামূলক বক্তব্যের পরেও কপিল মিশ্রের মতো বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লি পুলিশ। অথচ জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার আচমকা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা হয় দেবাঙ্গনা এবং নাতাশাকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া এবং তাঁদের উপরে চড়াও হওয়ার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার মীরন হায়দর, সাফুরা জ়ারগর, শিফা উর রহমান, আসিফ ইকবাল তনহা থেকে জেএনইউয়ের দেবাঙ্গনা, নাতাশা— লকডাউনের মধ্যেও দিল্লি পুলিশের পড়ুয়া গ্রেফতারির সংখ্যা নেহাত কম নয়। অভিযোগ, এঁরা সকলেই সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের মুখ। অনেককে বন্দি করা হয়েছে ইউএপিএ আইনে। অনেককে রাখা হয়েছে তিহাড় জেলে। জিজ্ঞাসাবাদের নামে নিয়মিত হেনস্থা করা হচ্ছে জেএনইউ-এর প্রাক্তনী উমর খলিদকেও। করোনা আবহেও অমিত শাহের পুলিশের এই ‘প্রতিশোধস্পৃহা’র বিরুদ্ধে সরব পড়ুয়া ও সমাজকর্মীরা।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল, দাবি চিনা সংস্থার